অবশেষে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারালো ব্রাজিল। মাঝমাঠের বিশ্বসেরা তারকা ফুটবলার ক্যাসেমিরোর একমাত্র গোলে আসরের টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে সেলেসাওরা। এই জয়ে জি গ্রুপ থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল।
এর আগে বিশ্বকাপের মঞ্চে সেলেসাওরা কখনো সুইসদের হারাতে পারেনি। নেইমারবিহীন ব্রাজিলই সুইস খরা কাটালো।
কাতার বিশ্বকাপে জয় দিয়ে আসর শুরু করা দুই দলই স্টেডিয়াম ৯৭৪’-এ নিজেদের ২য় ম্যাচটা শুরু করে দেখে শুনে। প্রথম ১০ মিনিট অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিল খেলা। তবে ১২ ও ১৩ মিনিটে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ব্রাজিলের কাণ্ডারি রিচার্লিসন দুই দফায় সুইসদের ডি বক্সে ঢুকলেও আয়ত্বে রাখতে পারেননি বল।
১৯ মিনিটে পাকেতার ক্রস খুঁজে পায়নি রিচার্লিসনের পা। ২৭ মিনিটে রাফিনার থ্রু থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়র পেয়েছিলেন ম্যাচের প্রথম সহজ সুযোগটি। কিন্তু এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকার দুর্বল শট ফেরাতে কোনো কষ্ট হয়নি সুইস গোলরক্ষক সোমারের। ৩১ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে রাফিনহা চেয়েছিলেন ডেডলক ভাঙ্গতে। কিন্তু গোলরক্ষক সোমার ছিলেন বলের ঠিক লাইনে। এরমধ্যে সুইজারল্যান্ড দুয়েকবার পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলেও সেগুলো ব্রাজিলের রক্ষণে কাঁপন সৃষ্টি করতে পারেনি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ব্রাজিল ব্যাক টু ব্যাক কর্নার পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। বরং পাল্টা আক্রমণে সুইজারল্যান্ড কর্নার আদায় করে। সে চেষ্টাও বিফলে গেছে এম্বোলোদের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একাদশে পরিবর্তন আনেন তিতে। মাঝ মাঠ থেকে ফরোয়ার্ড লাইনে ওঠানো পাকেতার জায়গায় মাঠে নামেন রদ্রিগো। ৫৩ মিনিটে ব্রাজিলের রক্ষণে দারুণে একটি আক্রমণ হানে সুইজারল্যান্ড। থ্রু বল থেকে সিলভান উইডমার বক্সে ঢুকলেও সতীর্থ কেউ ছিল না বল জালে জড়াতে।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের সহজতম সুযোগটি আসে ব্রাজিলের সামনে। ৫৬ মিনিটে ভিনিসিয়াসের ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন আগের ম্যাচে জোড়া গোল করা রিচার্লিসন। পরের ৫ মিনিট একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে সুইসরা। বেশ কয়েকটি আক্রমণে কাঁপন ধরিয়ে দেয় সেলেসাওদের শিবিরে। ৬৪ মিনিটে বল জালেও জড়িয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। সুইসদের মাঝ মাঠের ভুলকে কাজে লাগিয়ে ক্যাসেমিরোর অ্যাস্টিট থেকে গোল করেছিলেন এই উইঙ্গার। কিন্তু ভিএআর থেকে বাতিল করা হয় সেই গোল।
গোল বাতিল হবার পর যেনো আরও তেতে ওঠে সেলেসাওরা। একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রাখে সুইসদের রক্ষণকে। রিচার্লিসন আর রাফিনহাকে উঠিয়ে তিতে মাঠে নামান গ্যাব্রিয়াল জেসুস আর অ্যান্টোনিকে।
৮৩ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। সাজানো আক্রমণে ভিনিসিয়াস থেকে রদ্রিগো আর তার থেকে বক্সের ভেতর বল পান ক্যাসেমিরো। জোড়ালো সাইড ভলি বল জালে জড়াতে ভুল করেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ফুটবলার। ৮৭ মিনিটেই ২য় গোলের দেখা পেতে পারতো ব্রাজিল। বক্সের কোনা থেকে রদ্রিগোর জোড়ালো শট সুইস গোলরক্ষক সোমার ফিরিয়ে দিলে ব্যবধান দ্বিগুন করা হয়নি সেলেসাওদের।
অতিরিক্ত সময়ে ভিনিসিয়াস আর রদ্রিগো দুটি সুযোগ নষ্ট করায় এক গোলের জয় নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তিতের দলকে। টানা দুই জয়ে ফ্রান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে রাউন্ড অব সিক্সটিনে জায়গা করে নিলো সেলেসাওরা।