ময়মনসিংহের নান্দাইলে সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ওই নারীর ভাতা কারা উত্তোলন করছে কে ?
২০২০ সালের ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কার্ডের তালিকায় নাম ওঠে মোছা. হোসনে আরা নামের এক হতদরিদ্র নারীর। অথচ এখন পর্যন্ত সরকারের দেওয়া বরাদ্দ পাননি তিনি। এমনকি এ খবর জানতেনই না হোসনে আরা। সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ওই নারীর নামে আসা বরাদ্দ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কারা উত্তোলন করে আসছেন।
হোসনে আরা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়া গ্রামের মো. খোকন মিয়ার স্ত্রী। গতকাল শনিবার নিজ বাড়িতে তিনি বলেন, তাঁর নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির একটি কার্ড ছিল। এর আওতায় ৩০০ টাকা পেতেন, যা দিয়ে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারতেন। সম্প্রতি এ কর্মসূচির উপকারভোগীদের নাম অনলাইনে নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেয় খাদ্য অধিদপ্তর।
তিনি অনলাইনে নিবন্ধনের জন্য তাঁর কার্ডটি নিয়ে মুশুলি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন। তখন অনলাইনে নাম লিখে সার্চ দিয়ে জানা যায় যে সরকারি সহায়তায় অন্য একটি তালিকায় তাঁর নাম নিবন্ধিত রয়েছে। তাই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় তাঁর নাম নিবন্ধন করা যায়নি। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফাইজুল ইসলামকে জানান।
ফাইজুল ইসলাম বলেন, তিনি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, হোসনে আরার নাম ভিজিডি কর্মসূচির তালিকায় রয়েছে। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি সেখানে দেওয়া রয়েছে। এ বিষয়ে আগের ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন ফাইজুল ইসলাম। পরে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কালামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
হোসনে আরার প্রশ্ন, তিনি যদি ভিজিডির উপকারভোগী হয়ে থাকেন, তা হলে তাঁর কার্ড গেল কোথায়। কারা তাঁর কার্ড ব্যবহার করে প্রায় দুই বছরের ধরে বরাদ্দ তুলে নিয়ে খাচ্ছেন। আবেগাপ্লুত হয়ে হতদরিদ্র এই নারী বলেন, ‘ভাই যে সময় যাইতাছে, অহন আর চলতাম পারতাছি না। কার্ডটা পাওনের লাইগ্যা আফনেরা একটা ব্যবস্থা কইরা দেউহাইন।’
মুশুলি ইউপির সচিব মো. মঞ্জুরুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ভিজিডির চলমান তালিকা ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রণয়ন করা হয়েছিল। ওই সময়ের ইউপির সদস্যরা এসব কার্ড বিতরণ করেন। তালিকায় নাম থাকার পরও হোসনে আরার বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।