শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অভয়নগরে শিক্ষকের যৌন হয়রানির শিকার স্কুল ছাত্রী

মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার  বর্ণি বিছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, একটি স্কুলের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক মোঃ আজিজুর রহমান(৪৫) একই স্কুলের অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর রবিবার নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের কৃষক প্রভাষ চন্দ্রদের মেয়ে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী স্কুলে গেলে, ছুটির পরে ঐ শিক্ষক পড়ানোর অজুহাতে মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালায় এবং মেয়েটিকে মুখ খুলতে নিষেধ করে। মেয়েটি  বের হয়ে এসে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে স্কুলের বড়ো ম‍্যাডাম নামে পরিচিত মমতাজের কাছে বিচার দেন। সব শুনে মমতাজ ম‍্যাডাম মেয়েটিকে বলেন, এই কথা কাহকে বলোনা, বিষয়টি আমি দেখতেছি। কিন্তু ঘটনাটি ঐ স্কুলের অন্য ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
অভিভাবক মহল, বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেমায়েত ফকিরের দারস্থ হলে তিনি উত্তেজিত জনসাধারণকে ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষককের কঠিন আইনগত শাস্তির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনসাধারণ ঠান্ডা হয়। বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনসাধারণকে নিয়ে ভিকটিম মেয়েটির বাড়ি গিয়ে মেয়েটির মুখে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে আইন মোতাবেক শিক্ষককের শাস্তি পাওয়ার কথা বলেন। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী অভিভাবক মহল জানান, এই ঘটনার আগেও ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ  আছে। আমরা ঐ শিক্ষকের কঠিন শাস্তি চাই, অন্যথায় আমাদের ছেলে মেয়েদের ঐ স্কুলে আর পাঠাবোনা। অভিভাবক মহলের অনেকে জানান, ঐ লম্পট শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোর বদলে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন এবং রাজনৈতিক বিষয়ে ছেলে মেয়েদের শিক্ষাদেন। এরকম অনেক ঘটনার সব আমরা ক্ষমা করেছি আর এই ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য, আমরা ঐ শিক্ষকের ফাঁসি চাই।
ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম বলেন, শিক্ষক আজিজুর স্যার অনেক মেয়েদের সাথে এমনটি করেছে। গতকাল আমার সাথে পড়ার কথা বলে আমার বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে আমাকে যৌন হয়রানি করে আমি ভয়ে কাহাকেও কিছু বলিনি। আমি শিক্ষক আজিজুর স্যারের কঠোর শাস্তি চাই। এব্যাপারে মেয়েটির পিতা প্রভাষ চন্দ্র দে বলেন, আমার মেয়ের সাথে যা হয়েছে এটা আমরা মেনে নিতে পারছিনা। চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে আলোচনা করে মামলা করবো এবং আমি ঐ শিক্ষকের ফাঁসি চাই।  এব্যাপারে কথা হয়, বিছালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোতোষ চন্দ্র দের সাথে, তিনি বলেন, এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা মেনে নেয়া যায়না আমি ঐ শিক্ষককের কঠোর শাস্তি চাই। তিনি আরো বলেন, এমন ঘটনা আর যেন না হয়। সেই ব্যবস্থা  করতে  স্কুল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ঘটনার বিষয়ে জানতে বর্ণি বিছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রতিষ্টাতা সভাপতি আলি আহমেদের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনা আমরা জেনেছি, ম্যানেজিং কমিটির সকলকে নিয়ে আমরা বৈঠকে বসেছি, সকলের সম্মতিক্রমে ঐ শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভয়নগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হচ্ছে। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয় কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে। এর বেশি আমার কিছু বলার নেই। এবিষয়ে স্কুলের সভাপতি তপন কুমার বসু বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। একজনের জন্য এই স্কুলের কোন ক্ষতি হোক বা ছাত্র ছাত্রীর উপর কোনও খারাপ প্রভাব পড়ুক আমরা চাইনা।
প্রধান শিক্ষক শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, শিক্ষক আজিজুর সাহেব যদি অপরাধ করে থাকে আইনুযায়ী তার শাস্তি হোক এটাই আমি চাই।
বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেমায়েত ফকির বলেন, ঘটনা সত্য ঐ শিক্ষককের বিরুদ্ধে আগেও ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ আছে। তিনি ঘটনার পরেই পলাতক রয়েছেন। মুঠোফোনে ঘটনার বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, আমি এলাকায় গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার, এরকম কোন ঘটনায় ঘটেনি, এলাকাবাসী অনেকের সাথে আমার বহুপূর্বে আগে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে শত্রুতা চলে আসছে যে কারনে আমাকে আজ এই যঘন‍্য ঘটনা রটিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি ঐ মেয়ের সাথে কিছুই করিনি, শুধু পড়া লেখা শেখাতে নিজ হাতে দেখিয়ে দেওয়ার কারণে অহেতুক আমাকে মিথ্যা বানোয়াট গল্প সাজিয়ে ফাঁসানোর জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। এবিষয়ে অভিভাবকরে সাথে নিয়ে মামলা করা হবে।
অভয়নগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনা আমার জানা নেই, আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর