শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অভয়নগরে স্কুল শিক্ষক কর্তৃক ৫ম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার, থানায় অভিযোগ

মোঃ কামাল হোসেন,অভয়নগর প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২, ১:০০ অপরাহ্ণ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের মোঃ হালিম শেখের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাউলী গোপীনাথপুর মিলনী দাখিল মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রীকে উপজেলার নাউলী গ্রামের আব্দুস ছামাদ শেখের ছেলে মোঃ রেজাউল করিম(৫২), দীর্ঘ প্রাই দুইমাস ধরে যৌন হয়রানি করে আসছে, যে কারনে শিশু ছাত্রীটি মাদ্রাসায় আসতে ভয় পায় পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পেরে ছাত্রীর কাছে জানতে চাইলে শিশু ছাত্রীটি যৌন হয়রানির ঘটনা খুলে বলার পর ছাত্রীর চাচা হাকিম শেখ বাদি হয়ে প্রথমে মাদ্রাসা সুপার বরাবর নিজ ভাইজিকে যৌন হেনেস্তারের বিচার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি বৈঠক হয়। বিষয়টি আইনগত হওয়ার কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বাদিকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়ে গত ১২ অক্টোবর বুধবার একটি লিখিত  প্রত্যয়ণপত্র প্রদান করেন। উপায়ন্তর না পেয়ে ভিকটিমের চাচা হাকিম শেখ বাদি হয়ে ১২ অক্টোবর বুধবার অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৫ম শ্রেণীর ঐ ছাত্রীকে স্কুল শিক্ষক রেজাউল করিম, প্রাই দুইমাস আগে খাবার-বোরকা কিনে দিয়ে বিভিন্ন প্রলোভণ দেখিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করে। সর্বশেষ গত ১৯শে সেপ্টেম্বর দুপুর আনুঃ ১.১০মিঃ মাদ্রাসা ছুটি হলে ঐ ছাত্রী স্কুল শিক্ষক রেজাউল করিমের বাড়ির সামনে দিয়ে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময়, ছাত্রীকে ডেকে নিজের ঘরে নিয়ে যায় এবং ছাত্রীকে বিভিন্ন স্পর্শকাতর  স্থানে হাত দেয়, পরনের পরিহিত পায়জামা খুলে ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে ঐ ছাত্রী চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। ধর্ষণ করতে না পেরে ঐ শিক্ষক ছাত্রীকে গলা চেপে ধরে ছুরি গলায় ধরে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। ঐ ছাত্রী কোনরকমে স্কুল শিক্ষককের হাত থেকে মুক্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসে। পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীর কাছে সব কিছু শুনে ন্যায় বিচার চেয়ে ছাত্রীর পিতা বাড়িতে না থাকায় ছাত্রীর ছোট চাচা হাকিম শেখ অভয়নগর থানায় অভিযোগ করেন। এবিষয়ে ছাত্রীর চাচা মোঃ হাকিম শেখ বলেন, আমি সব কিছু জেনে প্রথমে মাদ্রাসার সুপারসহ ম্যানেজিং কমিটিকে ন্যায় বিচার চেয়ে অভিযোগ করি, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এই ধরনের অপরাধের বিচার  করতে পারবেনা। এটা আইন আদালতের বিষয় বলে আমাকে থানায় অভিযোগ দিতে পরামর্শ দিলে আমি থানায় অভিযোগ করলে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসে আমার ভাইজিকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উল্টো পাল্টা প্রশ্ন করে কোন মামলা হবেনা বলে জানিয়ে দিয়ে গেছে। ছাত্রীর পিতা মোঃ হালিম শেখ বলেন, আমি বাড়ি ছিলামনা আমি বাড়ি এসে ঘটনা শুনেছি, আমি ন্যায় বিচার চাই) নাউলী গোপীনাথপুর মিলনী দাখিল মাদ্রাসার সুপার বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আসার পর বিষয়টি মিমাংসা যোগ্য অপরাধ না হওয়ায় আমরা থানা অথবা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়ে প্রত্যায়ণপত্র দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে,তিনি সব কিছু অস্বীকার করে বলেন, আমি শুভয়াড়া স্কুলে শিক্ষকতা করি, আর বাড়ি আসি। এই অভিযোগ আমার নামে কেন উঠছে আমি এটা জানিনা। এলাকায় আপনার কোন বিষয়ে কারো সাথে ঝামেলা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন কারো সাথে আমার ঝামেলা নেই, তবে পারিবারিক ভাবে আমার কিছু ঝামেলা আছে যে কারনে একটি চক্র আমার নামে এমন অভিযোগ দেওয়ার কাজে লিপ্ত থাকতে পারে যা আমি জানিনা।
 বাসুয়াড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, আমি অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে দুইজন কনস্টবল সাথে নিয়ে ভিকটিম ছাত্রীর সাথে কথা বলেছি, মেয়েটির কথা সন্দেহজনক হওয়ায়, প্রাথমিক ভাবে কিছু বলা যাচ্ছেনা, ঘটনার সাথে অন্য কিছুর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, যেটা আমরা তদন্ত করছি, তদন্ত করে সঠিক সত্যটা বলা যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর