শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

রাজস্ব আয় রেকর্ড ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২, ৬:০৯ অপরাহ্ণ

সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেকর্ড ৩ লাখ ১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর। আগের অর্থবছরে তা ছিল ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা। সে হিসাবে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে নানামাত্রিক সংকট। প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক ধারা বজায় রয়েছে।
সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের হিসাব চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। তাতে দেখা যায়, গেল অর্থবছরে প্রথম বারের মতো রেকর্ড ৩ লাখ ১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর। আগের অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা। সে হিসাবে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
এনবিআর বলেছে, এই প্রথম বারের মতো রাজস্ব আদায় ৩ লাখ কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।
বাজেটে অর্থায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এনবিআর। মোট বাজেট বরাদ্দের ৮৬ শতাংশ অর্থ জোগান দেয় এই সংস্থা। আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আমদানি শুল্ক- এই তিন উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ করে এনবিআর। এর মধ্যে ভ্যাটের অংশ বেশি।
করোনা শুরু হওয়ার বছরে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি বড় ধাক্কা খায়। বিরূপ প্রভাব পড়ে রাজস্ব খাতে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় পুরনো চেহারা ফিরে পায় রাজস্ব খাত।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফ-এর সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বিদেশি ঋণের চাপ কমাতে হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তবে কর আহরণ বাড়াতে যে ধরনের সংস্কার দরকার তা এখনও করা হয়নি। রাজস্ব খাতে কার্যকর সংস্কার ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।’
বর্তমানে দেশের জিডিপির তুলনায় রাজস্ব অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে, যা বিশ্বে সবচেয়ে কম। আইএমএফ মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার, তার তুলনায় রাজস্বের অংশ খুবই নগণ্য। কর-জিডিপি অনুপাত কমপক্ষে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার তাগিদ দিয়ে আসছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদানকারী বহুজাতিক সংস্থাটি।
পরিসংখানে দেখা যায়, গত বছর সবচেয়ে ভালো আদায় হয়েছে আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর। এ সময় আয়কর আহরণ হয় ১ লাখ ২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। আর প্রবৃদ্ধি বা আয় বেড়েছে ২০ শতাংশ।
জানা যায়, গত বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপি বাস্তবায়ন ভালো হওয়ায় আয়করে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। কারণ এডিপি বাস্তবায়ন ভালো হলে উৎসে কর আহরণ বাড়ে। আর উৎসে কর হচ্ছে আয়করের অন্যতম বড় খাত। গত বছর ৯৩ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আমদানি শুল্ক খাত। বিদায়ী অর্থবছরে ৮৯ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা আয় হয়। আর আদায় বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।
আমদানি বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় আমদানি শুল্ক আহরণে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে বেশি শুল্ক আয় হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে। এর পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি টাকা।
পরিমাণগত দিক দিয়ে বেশি হলেও স্থানীয় ভ্যাট আহরণে প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে গত বছর। আলোচ্য অর্থবছরে ১ লাখ ৮ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় হয়। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয় ১১ শতাংশ।
 অবশ্য গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রায় কোনো কাটছাঁট করা হয়নি। মূল লক্ষ্যমাত্রা যা প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় সেটিই বহাল রাখা হয়। ফলে রেকর্ড রাজস্ব আদায়ের পরও ঘাটতি বেশি হয়েছে বলে জানান রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সব সময় চ্যালেঞ্জিং। কারণ এটি সব সময় বেশি ধরা হয়। আমরা চেষ্টা করছি, লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছানোর। আদায় বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com