সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার

আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ
আপডেট সময়: শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২, ৮:৩১ অপরাহ্ণ

আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (৩২) কে বগুড়ার মোকামতলা বন্দর থেকে গ্রেপ্তার
করেছে আটোয়ারী থানা পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ
ইউসুফ আলীর দিকনির্দেশনা ও আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোহেল রানা’র
পরামর্শ মোতাবেক এসআই শাহীন আল মামুন এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ পুলিশ দল বগুড়ার
শিবগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে শুক্রবার (১৫ জুলাই) ভোর চারটার দিকে অভিযান
চালিয়ে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। আলাউদ্দিন (৩২) পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার
মির্জাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের(ভূমি অফিস পাড়া) হবিবর রহমানের পুত্র। অফিসার
ইনচার্জ সোহেল রানা জানান, ২০১২ সালের ৯ডিসেম্বর বিশ^জিৎ দাসকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে
হত্যা করে দুস্কৃতিকারীরা। ২০১২ সালে বিশ^জিৎ হত্যাকান্ডের পর আলাউদ্দিন আত্মগোপন করে।
পুলিশের নথিতে পলাতক আলাউদ্দিন তার স্ত্রীসহ ৭জুলাই ঈদের ছুটিতে মোকামতলা বন্দরে
শ^শুরবাড়ীতে বেড়াতে আসে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানকার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের
সহযোগিতা নিয়ে আলাউদ্দিনের শ^শুরবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ
জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলাউদ্দিন জানিয়েছে, আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী নাহিদ
ফেরদৌস টেকনাফে আলাদা দু’টি বেসরকারি সংস্থায় চাকরী করে। বিশ^জিৎ হত্যকান্ডের আগে
থেকেই আলাউদ্দিন ও নাহিদা ফেরদৌস এর পরিচয় ছিল। ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করে। বিশ^জিৎ
হত্যাকান্ডের পর আলাউদ্দিন গা ঢাকা দেয়। পরে পরিচয় গোপন করে প্রথমে গাজিপুরে একটি
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী নেয়। আলাউদ্দিন জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে
এবং সেখানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০১২ সালের ৯ডিসেম্বর বিরোধী দলের
অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ^জিৎ দাসকে জগন্নাথ
বিশ^বিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটান ও কোপান। বাঁচার জন্য
দৌড় দিলে তিনি শাঁখারী বাজারের রাস্তার মুখে পড়ে যান। রিক্সা চালক রিপন তাকে রিক্সায় তুলে
মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ^জিৎকে মৃত ঘোষনা করেন।
ঘটনার সময় বিশ^জিৎ লক্ষী বাজারের বাসা থেকে শাঁখারী বাজারে নিজের দোকানে যাচ্ছিলেন।
বিশ^জিৎ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ^র গ্রামের দাসপাড়া মহল্লার বাসিন্দা অনন্ত
দাসের ছেলে। এ ঘটনায় ওই দিনই সুত্রাপুর থানায় মামলা হয়। মামলাটি পরে দ্রুত বিচার
ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৮ডিসেম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর
বিচারক এ বি এম নিজামুল হক এ মামলায় রায় দেন। রায়ে ২১ আসামীর মধ্যে ৮জনকে মৃত্যুদন্ড ও
১৩জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে মৃত্যুদন্ড পাওয়া আট
আসামীর মধ্যে দু’জনের মৃত্যুদন্ড বহাল, চারজনের মৃত্যুদন্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অপর
দু’জনকে খালাস দিয়ে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদন্ড
পাওয়া ১৩ আসামীর মধ্যে যে দু’জন আপিল করেন তারা খালাস পেয়েছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত
আলাউদ্দিন জানান, ওই সময় সে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে ৩য় বর্ষের
শিক্ষার্থী ছিল। নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবী করলেও বিশ^বিদ্যালয় শাখা কিংবা অন্য
কোথাও ছাত্রলীগে তার নাম ছিল না । ঘটনার দিন সে ছাত্রলীগের মিছিলে ছিল কিন্তু বিশ^জিৎ
দাসকে আক্রমনের সময় জড়িত ছিলনা। কেন মামলার আসামী করা হলো তাকে এর উত্তরে সে
জানায়, ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের শিকার সে। আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ
সোহেল রানা বিশ^জিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তরের বিষয়টি

নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে শনিবার ( ১৬ জুলাই) সকালে পঞ্চগড়
বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com