রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আগৈলঝাড়ায় ঘুষ দাবি ও ফাও খাওয়ার অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বরিশাল কাস্টম্স এর কর্মকর্তাসহ তিন জনকে

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি বরিশাল:
আপডেট সময়: বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২, ২:৩৫ অপরাহ্ণ

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ দাবি ও হোটেলে খাবারের টাকা না দেয়ায় কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর দুই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি। অব্যাহতি প্রাপ্তরা হচ্ছেছন কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রোমান হাওলাদার, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মেহেদী হাসান তনয় ও সাব-ইন্সপেক্টর হানিফ হাওলাদার।
কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর বরিশাল সার্কেলের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, হোটেলে খাবার খেয়ে টাকা না দেয়া এবং এক ব্যবসায়ীর কাছে ঘুষ দাবি করায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ডেপুটি কমিশনারকে প্রধান করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার সামনের ‘চান হোটেলের’ মালিক চান মিয়া শাহ বলেন, সোমবার দুপুরে তার হোটেলে চারজন খাবার খান। বিল চাইলে তারা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজেদের কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তা পরিচয় দেন। তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে আইসক্রীম ফ্যাক্টরীর মালিক বাবু ফকির তাদের দাবী করা ছয় হাজার টাকা নিয়ে আসেন। এরপর তারা ওই অফিসের কর্মকর্তা কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের ইউএনও’র কাছে নিয়ে যান। সেখানে ইউএনও মো. শাখাওয়াত হোসেন বরিশাল অফিসে যোগাযোগ করে তারা ওই অফিসের কর্মকর্তা নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেন। বিষয়টি চান মিয়া ও বাবুসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সামনেই ইউএনও কথা বলেন বলে জানান চান মিয়া। আইস্ক্রিম ফ্যাক্টরীর মালিক বাবু ফকির বলেন, ওই চার কর্মকর্তা তার ফ্যাক্টরীতে গিয়ে বরিশাল থেকে গাড়িতে আসা বাবদ ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই টাকা নিয়ে চান হোটেলে দেখা করতে বলেন। টাকা নিয়ে চান হোটেলে গিয়ে দেখতে পান ওই কর্মকর্তাদের সাথে হোটেল মালিকসহ আরও কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বাগবিতন্ডা হচ্ছে। এ কারনে টাকা না দিয়ে তাদের ইউএনও’র কাছে নিয়ে যান বলে জানান বাবু। বাবু অরও জানান, সোমবার এভাবে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তারা চাঁদাবাজি করেন। সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা ভ্যাট আদায়ের জন্য এসেছে বলে জানান। ওই সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রেষ্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান, ডিলারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অনেকে আবার মুখ খুলতে সাহস পায়নি পরবর্তীতে যদি বড় অংকের ভ্যাট বসিয়ে দেয়া তাদের উপর এ কারনে।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়ার ইউএনও সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাদের অর্থ দাবির ফোন রেকর্ডিং শুনে তাৎক্ষনিক বরিশাল কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর উর্ধতন কর্মকর্তা বরিশাল সার্কেল অফিসার তারিকুল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করেন। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়। ইউএনও আরো জানান, বুধবার দুপুরে বরিশাল কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাকে মোবাইল করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। বরিশাল কাস্টম্স এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ওই তিনজনকে কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাকির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ধরনের অভিযানে গেলে ব্যবসায়ীরা কোন সময়ই সহযোগিতা করেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর