কভিড-১৯ এর ঝুঁকির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রপ্তানি খাতের কারখানাগুলোর খোলার কথা বলা হলেও এখন শিল্প অঞ্চলের প্রায় সব কারখানাই খোলা। মানা হচেছ না সামাজিক দূরত্ব। ফলে বিশেষ করে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে দিন দিন বাড়ছে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৬ এপ্রিল নতুন করে কারখানা খোলে দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ জনের বেশী গার্মেন্টস শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৫ জন।
শ্রমিক নেতা সিরাজুল হক রনি বলেন, আংশিকভাবে কিছু কিছু বড় কারখানা স্বাস্থ্য বিধি মানলেও অধিকাংশ কারখানাই কোনো নিয়ম নীতি মানছে না। তারা লোক দেখানোর নামে কারখানা গেইটে স্বাস্থ্য বিধি লিখে রাখলেও কারখানা ভেতর শ্রমিকদের বসার ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব রাখছে না। মাস্ক নেই, নেই পিপিই। ফলে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আমাদের হিসেব অনুসারে ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজীপুর, সাভার , নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা এবং চট্টগ্রামে।
বিজিএমইএ কারখানা মনিটরিং করার কথা বললেও এই মনিটরিং সেলের কার্যক্রম একেবারেই সন্তোষজনক নয়। প্রকৃত অর্থে মালিকরা শ্রমিক স্বার্থ নিয়ে কখনো ভাবেন না। এই মুহুর্তে কারখানাগুলোতে সরকারি-বেসরকারি নজরদারি বাড়ানোর দরকার।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন শ্রমিকের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েকজন মারাও কয়েকজন গেছেন। তবে তারা সবাই যে কারখানায় আক্রান্ত হয়েছেন, এটি বলা যাবে না। কেননা অনেকেই এলাকায় যাওয়ার পরও আক্রান্ত হতে পারেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে শিল্পপুলিশ সূত্রে জানা গেছে বুধবারও মজুরির দাবিতে গাজীপুর সাভার এবং আশুলিয়ার আটটি কারখানা শ্রমিক বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। ধামরাইয়ের এলডারিজ এগ্রোজ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড, আরগাস মেটার ব্যাটারি ফাক্টরি, সাভারের বভস এ্যাপারেলস লিমিটেড, গাজীপুরের ব্যান্ডো ফ্যাশন লি, এবা ফ্যাশন লি, ডাব্লু এম ফ্যাশান, গ্রীন সোয়েটার, আর্থ ফুড ওয়ার।
শিল্প পুলিশের সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা খোলার এবং শ্রমিক সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও শ্রমিকদের মধ্যে এখনও যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। এরফলে ইতিমধ্যে পোশাককর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে।
তিনি বলেন, এই পযন্ত ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে বুধবার নতুনভাবে আক্রান্ত হয়ে ৫ জন। শ্রমিকরা তার জীবনের চেয়ে মজুরি আর বোনাস নিয়ে উদ্বীগ্ন হওয়ায় মালিকরা না চাইলেও শ্রমিকদের কাজ যোগদানে বাধ্য হচেছ। ফলে স্বাস্থ্য বিধি মানা কঠিন হয়ে পড়ছে।
#by apon khan