দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা সেতু উদ্বোধণের আগেই মাত্রাতিরিক্ত টোল নির্ধারণ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহনের মালিক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ পায়রা সেতু পারাপারে পূণরায় নতুন করে টোল নির্ধারণের জোর দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর উদ্বোধণের অপেক্ষায় থাকা পায়রা সেতুর টোল নির্ধারণ করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। গত ১৮ মার্চ সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের (টোল অধিশাখা) উপ-সচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে সেতুর টোল নির্ধারণ করা হয়। এতে পায়রা সেতুতে ট্রেইলার ৯৪০ টাকা, হেভি ট্রাক ৭৫০, মিডিয়াম ট্রাক ৩৭৫, বড় বাস ৩৪০, মিনি ট্রাক ২৮০, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যান ২২৫, মিনিবাস-কোস্টার ১৯০, মাইক্রোবাস ১৫০, ফোর হুইলচালিত যানবাহন ১৫০, সেডান কার ৯৫, ৩-৪ চাকার যান ৪০, মোটরসাইকেল ২০ এবং রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল, ঠেলাগাড়ি ১০ টাকা হারে টোল নির্ধারণ করা হয়।
ভূক্তভোগীরা জানান, লেবুখালী ফেরি পারাপারে মোটরসাইকেল পাঁচ টাকা, প্রাইভেটকার ৪০, যাত্রীবাহী বাস ১০০, বড় ট্রাক ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়। কিন্তু ফেরির তুলনায় সেতুর টোল মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রাইভেটকার চালক রাসেল মিয়া বলেন, ফেরিতে আমরা ৪০ টাকা দিয়ে পারাপার হচ্ছি। আর সেতু উদ্বোধনের পর ৯৫ টাকা টোল দিতে হবে, যা একেবারে অযৌক্তিক। বাস চালক মোমেন হোসেন বলেন, যেখানে ফেরিতে ১০০ টাকা করে নিচ্ছে সেখানে ব্রিজে ৩৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ফেরিতে সবসময় পাঁচ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এখন ব্রিজে ২০ টাকা দিতে হবে এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি রিয়াজ মৃধা বলেন, পায়রা সেতুর টোল ফেরির তুলনায় তিনগুণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এভাবে হলে কেউ গাড়ি চালাতে পারবে না। প্রয়োজনে আমরা অতিরিক্ত টোলের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশালের সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, পায়রা সেতু অবশ্যই সরকারের বড় একটি অর্জন। কিন্তু সেতুর টোল নির্ধারণ নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। সব যানবাহনেই মাত্রারিক্ত টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই তিনি টোল পুননির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক ও জনপথ বরিশাল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, ফেরি ও সেতুর টোলের বিষয়টি স¤পূর্ণ আলাদা। সড়ক পরিবহন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে টোল নির্ধারিত হয়ে থাকে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।