বিয়ের প্রলোভন দিয়ে চট্টগ্রাম ভেটেনারি অ্যান্ড এ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হামিদ মোহাম্মদ মোহাইম্মীন হোসেন চঞ্চল এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ওই ছাত্রীর দাবি।
মঙ্গলবার ( ২২ জুন) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ছাত্রী লিখিত বক্তব্যে এমনটাই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর দাখিল করেছেন।
বিয়ে করতে রাজি না হয়ে উপরন্তু চঞ্চল ওই ছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকিসহ ধর্ষণের ধারণ করা ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এমন অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে ওই ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংবাদ সম্মেলনে আসা ঐ ছাত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে তার দাবি, ‘শুধু আমি নই, আমার বড় বোন আদুরী খাতুনও ওই চেয়ারম্যানের লালসার শিকার হয়ে মারা গেছেন। যেটি আমরা জানতে পারি মাত্র কয়েক দিন আগে বাড়ির বইপত্র গোছগাছ করার সময় পাওয়া একটি ডায়েরীর সূত্রধরে। আমার বোন আদুরী খাতুনের প্রেমিক চঞ্চলের হাতে লেখা একটি ব্যক্তিগত ডায়েরি থেকে জানতে পারি, আমার বোনের সঙ্গে দেবোত্তর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান চঞ্চলের প্রেমের সম্পর্ক হয় ২০১০ সালে।
চঞ্চল তখন দেবোত্তর ইউনিয়নের ইশারত আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার বোন একই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। আমার বোনকে বিয়ে করবে আশ্বাস দিয়ে ২০১২ সালে বেড়াতে নিয়ে যায় পাবনা শহরে। সেখানে অজ্ঞাত এক বাড়িতে তার বোনকে চঞ্চল ধর্ষণ করে। বোন বাড়িতে ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বোনকে মৃত ঘোষণা করেন। বোনের মৃত্যুকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেই। কারণ তখন আমরা বিষয়টি জানতাম না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘বোন মারা যাওয়ার পর চঞ্চল সান্ত্বনা দিতে আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে চঞ্চল আমাকে বলেন, আদুরীকে তার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু মারা যাওয়ার কারণে সেটি যেহেতু আর সম্ভব হয়নি, এজন্য তিনি আমাদের পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে প্রস্তাব দেন। এতে করে আমার সঙ্গে চঞ্চলের স্বাভাবিক সম্পর্ক হয়। পরে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। বিয়ে হওয়ার বিষয়টি এক প্রকার নিশ্চিত।
একদিন আমাকে বেড়ানোর কথা বলে পাবনা শহরে নিয়ে যায়। সেখানে জোরপূর্বক আমার সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তা মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। সেই সুযোগ নিয়ে বার বার আমার সঙ্গে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে প্রস্তাব দিতে থাকে। বিয়ের করার কথা বললে সে নানা টালবাহানা করতে থাকে। পাশাপাশি নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এতদিন পর বোনের ডায়েরি পাওয়ার পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আমাদের ধারণা, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে।