মুহাইমিনুল (হৃদয়), টাংগাইল প্রতিনিধিঃ
জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। কাজ করার হাত দুটো নেই তার। তারপরও সবই করছেন, কারও সহায়তা ছাড়াই।তারপরও থেমে নেই তার জীবন যুদ্ধ। ৬৮ বছর কেটে গেছে, কিন্তু হাত পাতেননি কারও কাছে।নাম তার জগন্নাথ শীল।টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা।
১৯৬৯ সালে পা দিয়ে লিখেই করছেন এসএসসি পাশ।মুক্তিযুদ্ধের সময় করেছেন সেচ্ছাসেবকের কাজ।এসএসসি পাস করলেও দুই হাত না থাকায় চাকরি মেলেনি কোথাও। তাতে হাল ছাড়েননি জীবন-জীবিকার লড়াইয়ে।থাকেন জীর্ণশীর্ণ ভাঙ্গা ছোট্র একটি ঘরে।
এই বৃদ্ধ বয়সেও বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়েই টানছেন সংসারের ঘানি।কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে শিক্ষার্থীরা আর তেমন পড়তে আসছেনা। ফলে অভাবের তাড়নায় এক বেলা খেয়ে, আরেক বেলা না খেয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাকে।
জীবনযুদ্ধে দুপা দিয়েই লড়ছেন সাহসী জগন্নাথ শীল। খাওয়া দাওয়া, লেখা পড়া, শিক্ষার্থীদের পড়ানোসহ কোনও কাজই থেমে নেই ৬৮ বছরের এ বৃদ্ধার।
বয়সের ভারে তার শরীর অনেকটাই নাজুক।
তার মধ্যে আবার করোনার শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেছে তার আয়ের পথটা। শিক্ষার্থীরা পড়তে আসছে না আর। তাতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।জগন্নাথ শীলের দুই ছেলে এক মেয়ে। ১০ বছর আগে বড় ছেলে বিয়ে করে সংসার থেকে পৃথক হয়ে যায়।
এক সময় সিনেমায় অভিনয়ও করলেও এখন প্রাইভেট পড়িয়েই চালান সংসার।
এখন তিনি প্রধান মন্ত্রী সাথে দেখা করতে চান।জানাতে চান তার দুঃখ দুর্দশার কথা।
তার জীবনের এই শেষ মূহুর্তে চান সবার একটু সহানুভূতি, আর সরকারের সার্বিক সহায়তা।
সরকারি ভাবে সার্বিক সহায়তা করার আশ্বাস দিলেন ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ ইসরাত জাহান।
প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি সব ধরনের সহায়তা পাবে জগন্নাথ শীল। বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে জীবনে। এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।