হিমেল চন্দ্র রায়, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী সদর উপজেলার ৫নং টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মছিরত আলী শাহ্ ফকির বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল ২৯ অক্টোবর ২০২০ইং বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহন সম্পন্ন হয়। দীর্ঘ ৯ বছর পর নীলফামারী জেলা সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়েছেন চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মছিরত আলী শাহ্ ফকির। তিনি এবার সহ দশবার জনগনের ভোটের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
ধানের শীর্ষ প্রতিকের ছাইয়েদুর রহমানকে ৪ হাজার ৯৮৬ ভোটে ও নৌকা প্রার্থী আবুল কাশেম শাহ্কে ২ হাজার ৩৭৫ ভোটে পরাজিত করে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ২৯ অক্টোবর ২০২০ইং সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ ও ভোট গননা শেষে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন রিটানিং কর্মকর্তা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার আফতাব উজ্জামান। তিনি জানান, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মছিরত আলী শাহ ফকির চশমা প্রতিকে ৮ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তার নিকটতম আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আবুল কাশেম শাহ্ ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৯৮। বিএনপির প্রার্থী ছাইয়েদুর রহমান ভোট পান ৩ হাজার ২৯৭ ভোট। এই নির্বাচনে সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ভোটের ফলাফলে সংরক্ষিত ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ প্রাথীর মধ্যে হেলিকপ্টার প্রতিকের মোছাঃ আরজু আরা বেগম এক হাজার ২৬১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বক প্রতিকের শ্রী তৃপ্তি রানী। তার ভোট সংখ্যা এক হাজার ১০। সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর মধ্যে মোছাঃ পেয়ারী আক্তার হেলিকপ্টার প্রতিকের এক হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাল গাছ প্রতিকের আনোয়ারা বেগম ভোট পেয়েছেন এক হাজার ৩৬৮। সংরক্ষিত ৭,৮,৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৫জন প্রার্থীর মধ্যে সূর্যমূখী ফুল প্রতিকের নুর বানু বেগম এক হাজার ৯৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তালগাছ প্রতিকের রেনু বেগম ভোট পেয়েছেন এক হাজার ১২৯।
অপরদিকে ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে মোট প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছিলেন ৩৯ জন। ফলাফলে ১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে টিউবওয়েল প্রতিকের মিলন চন্দ্র সরকার ৮৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোরগ প্রতিকের দীনেশ চন্দ্র রায় ৫৯১ ভোট পান। ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রাথীর মধ্যে তালা প্রতিকের রুহুল আমিন ৮৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবওয়েল প্রতিকের মিহির কুমার রায় ভোট পান ৭৫২। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে টিউবওয়ের প্রতিকের হাবিবুর রহমান ৮৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বৈদ্যুতিক পাখা প্রতিকের ধনঞ্জয় রায় ভোট পেয়েছেন ৬০৮। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তিন জন প্রার্থীর মধ্যে মোরগ প্রতিকের মাহমুদুল হাসান মাসুম এক হাজার ১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আপেল প্রতিকের হেলাল উদ্দিন ভোট পেয়েছেন ৭১৬ । ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ জন প্রাথীর মধ্যে ৬৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন ফুটবল প্রতিকের আবুল কালাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবওয়েল প্রতিকের মোশারফ হোসেন ভোট পেয়েছেন ৫৪৮ ভোট। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৫জন প্রাথীর মধ্যে ফুটবল প্রতিকের আবু তালেব ৯১১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আপেল প্রতিকের সানোয়ার হোসেন ভোট পেয়েছেন ৫৫৭।
৭ নম্বর ওযার্ডের ৫জন প্রার্থীর মধ্যে তালা প্রতিকের মোকবুল হোসেন ৩৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবওয়েল প্রতিকের শহীদুল ইসলাম ভোট পেয়েছেন ৩৩২। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৫জন প্রাথীর মধ্যে ভ্যান গাড়ী প্রতিকের আসাদুল ইসলাম ৬৩৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুটবল প্রতিকের ছামিদুল হক ভোট পেয়েছেন ৫৪১। ৯ নম্বর ওযার্ডের ৪জন প্রার্থীর মধ্যে মোরগ প্রতিকের মুজিবর রহমান এক হাজার ১৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবওয়েল প্রতিকের ইদ্রিস আলী ভোট পেয়েছেন ৫৬৭। নীলফামারী সদর সার্কেল সাময়িক দায়িত্বে পুলিশ সুপার মোঃ রহুল আমীন সাংবাদিকদের জানান, শতভাগ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ভোটারদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ যাবতীয় পদক্ষেপ ছিলো। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী বলেন সদর থানা ও সকল পদমর্যাদার অফিসার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে প্রতিটিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে আটজন পুলিশ সদস্য এবং চারটি সাধারণ কেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে সাতজন পুলিশ সদস্য এবং ১৭ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত করা ছিলো। এছাড়াও তিনজন নির্বার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃতে তিনটি মোবাইল টীম এবং বিজিবি ও র্যাবের টহল দল ও রির্টানিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আফতাব উজ্জামান নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ছিলেন।
CBALO/আপন ইসলাম