খেলা ডেস্ক:রানে ফেরার জন্য বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে একেক ব্যাটসম্যান অনুসরণ করছেন একেক উপায়। তবে কেউ যে তাতে স্থির থাকছেন, তাও নয়। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে আসতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত একাদশের সৌম্য সরকার। তামিম ইকবাল একাদশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৪৭ বল খেলে করলেন মাত্র ৯ রান। ধরে খেলে ইনিংস বড় করার চেষ্টায় সফল না হওয়া এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গতকাল মাহমুদ উল্লাহ একাদশের বিপক্ষে শুরু থেকেই চড়াও হওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামলেন। ফলাফল, রুবেল হোসেনের করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল হাঁকাতে গিয়ে টেনে আনলেন উইকেটে। চার বলে দুই বাউন্ডারিতেই শেষ তাঁর ইনিংস।
সৌম্য একা নন, একই পথের পথিক আরো অনেকেই। দীর্ঘ সাত মাসের করোনা বিরতির পর ছন্দে ফেরার লড়াইয়ে তাঁরা নিজেরাই যেন দ্বিধায়। কেউ কেউ ধরে খেলতে গিয়ে ৪০-৪৫ বল খেলার পর যখন দেখছেন রান উঠছে না, তখন সেই হতাশায় বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে আসছেন। আবার কেউ শুরু থেকেই মেরে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন। তাহলে উপায়? এই আসরে মাঝেমধ্যে ধারাভাষ্য দিতে আসা শাহরিয়ার নাফীসের সমাধান, ‘এর মাঝামাঝি মানসিকতায় যখন ওরা ব্যাটিং করতে শুরু করবে, তখন রান পাবে।’
সেই মাঝামাঝি মানসিকতার ব্যাটিং নাফীস একজনকে করতেও দেখেছেন। জাতীয় দলের সাবেক এই ওপেনারও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) দিয়ে ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। সে জন্য দিনে দুই বেলা নিয়ম করে খাটছেনও। এক বেলায় ক্রিকেট অনুশীলন থাকে তো আরেক বেলায় জিম। এর মধ্যেই সময় করে ধারাভাষ্য দিতে আসা। এসেছিলেন তামিম ও নাজমুল একাদশের মধ্যকার ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও। এসেই দেখেছেন মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিও। ১০৩ রানের সেই ইনিংসটি সবার জন্য অনুসরণীয়ই বলছেন নাফীস, ‘মুশফিক সেদিন প্রথম থেকেই একদম বেসিক ক্রিকেট খেলেছে। বড় শটে রান করেনি। ট্যাপ করে সিঙ্গেল নিয়েছে, সোজা ব্যাটে সিঙ্গেল নিয়েছে। বেশি বাজে বল চার মেরেছে। ব্যাটসম্যানরা যদি এভাবে ব্যাটিং করা শুরু করে তাহলে সবাই রান করবে। মুশফিক ওর খেলার মাধ্যমে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে এভাবে খেললেই রান করা সম্ভব।’
কাল মাহমুদ উল্লাহ একাদশের বিপক্ষেও বদলায়নি মুশফিকের রান করার ধরন। পেসার সুমন খানের বলে ১ রানে অবশ্য প্রথম স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজের সৌজন্যে জীবন ফিরে পান। এরপর ৯০ বলে পৌঁছেছেন ফিফটিতে। ৫০ পার করা শটটি ছিল তাঁর প্রথম বাউন্ডারি। প্রথম ৪৭ রানের ৪০ এসেছে সিঙ্গেল থেকে। একটি তিন আর দুটো ডাবল থেকে এসেছে বাকি ৭ রান। এবাদত হোসেনের বলে স্কুপ করতে গিয়ে শেষ হয়েছে মুশফিকের ৯২ বলে ৫২ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচেও তাঁর ইনিংসের খুঁত বলতে নাফীসের চোখে বারবার ওই রিভার্স সুইপ ও স্কুপ করার চেষ্টাই, ‘বারবার রিভার্স সুইপ করার ব্যর্থ চেষ্টা বাদ দিলে আগের ম্যাচেও ওর ইনিংসটি ছিল দারুণ। সার্বিকভাবে যে ব্যাটিং সে করেছে, সেটি সবার জন্যই উদাহরণ।’