রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
রক্তদাতাদের একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে কমিটি গঠনে অনিয়মের তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকজুড়ে। একই সাথে থলের বেড়াল বের হতে শুরু করেছে কমিটি গঠনের নেপথ্যের অসৎ উদ্দেশ্য। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার।
শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর গৌরনদীতে বন্ধুত্বের বন্ধন ব্লাড ডোনার্স ক্লাব (বিবিবিডিসি) নামের ২৫ সদস্য বিশিষ্ট এক বছরের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠণ করা হয়। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে গৌরনদীর সিকদার ক্লিনিকের মালিক আব্দুল ওহাব সিকদারকে। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মৌরী ক্লিনিকের মালিক মুহিত শরীফ।
একইভাবে গৌরনদীর শারমিন ক্লিনিক, মোস্তাফিজুর রহমান ডায়াবেটিক হাসপাতাল, আগৈলঝাড়ার দুঃস্থ মানবতা হাসপাতালের পরিচালক, ক্লিনিকের ম্যানেজার, দুইজন এমবিবিএস চিকিৎসকসহ কয়েকজন যুবককে কমিটির বড় বড় পদে রাখা হয়েছে। ওই একই কমিটিতে প্রচার সম্পাদকের পদে রাখা হয়েছে গৌরনদীর সিনিয়র সাংবাদিক মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া, সাংবাদিক জিএম জসিম হাসান ও মো. মেহেদী হাসানকে।
নবগঠিত কমিটি সম্পর্কে ওই তিন সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, কথিত ওই কমিটি সম্পর্কে কিংবা পদে রাখার বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা আরও বলেন, যারা কথিত কমিটি গঠণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছেন তাদের প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। কারণ আমাদের কিছুই না জানিয়ে এ কথিত কমিটি গঠন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে সম্মানহানি করা হয়েছে।
সূত্রমতে, ইতোমধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন ব্লাড ডোনার্স ক্লাব (বিবিবিডিসি)’র এক কর্মীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা আরেকটি বিষয় নিয়েও সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, গৌরনদীর মৌরী ক্লিনিক, শারমিন ক্লিনিক, সিকদার ক্লিনিক ও মোস্তাফিজুর রহমান ডায়াবেটিক হাসপাতালে সরাসরি বিবিবিডিসি থেকে রক্তদাতা সরবরাহ করা হয়। এসব ক্লিনিক বিবিবিডিসি ব্যতিত অন্যকোন সংগঠনের সাথে যুক্ত নেই।
এ ব্যাপারে পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মনীষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বিবিবিবিডিসি যেখানে নিজেদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বলে প্রচার করছে সেখানে ওই চারটি ক্লিনিকের নাম উল্লেখ করে সরাসরি রক্তদাতা সরবরাহ করা কিংবা এসব ক্লিনিক বিবিবিডিসি ব্যতিত অন্য কোন সংগঠনের সাথে যুক্ত নেই বলে প্রচার করার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কারও কাছে বাঁধা থাকবে কেন। তাহলে অন্যকোন ক্লিনিকে মুমূর্ষ রোগিদের রক্তের প্রয়োজন হলে তাদের কি ওই সংগঠন রক্ত দিবে না। এছাড়া ক্লিনিক মালিকরাও যুবক ও তরুন রক্তদাতাদের সাথে কেন চুক্তিবন্ধ কিংবা তাদের কমিটিতে থাকতে হবে তাহাও প্রশ্নবিদ্ধ।
সচেতন গৌরনদীবাসীর মতে, ক্লিনিক মালিকরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে পুঁজি করে তাদের ব্যবসায়ীক ফায়দা হাসিলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে এখনই ওইসব ফায়দা হাসিলকারী ব্যক্তিদের লাগাম টেনে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।
CBALO/আপন ইসলাম