সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

অধিনায়ক তামিমের ‘ক্লাস টেস্ট’

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ

খেলা ডেস্ক:প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষায় বসে যাওয়ার ঝক্কিও কম নয়। ভুলভাল হওয়ার আশঙ্কাই থাকে বেশি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত করোনা বিরতিকে অভিশাপ নয়, এখন বরং একরকম আশীর্বাদই মনে হচ্ছে ‘অধিনায়ক’ তামিম ইকবালের। তা না হলে যে কোনো ‘ক্লাস টেস্ট’ ছাড়াই সরাসরি পরীক্ষায় বসে যেতে হতো!

তাঁর চোখে আপাতত প্রথম ‘ক্লাস টেস্ট’ বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ। যেখানে আজ তাঁর নিজের নামে একাদশ মুখোমুখি হচ্ছে মাহমুদ উল্লাহ একাদশের। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক ঘোষিত হওয়ার পর যেটি হতে যাচ্ছে এই ওপেনারের নেতা হিসেবে প্রথম ম্যাচও। অবস্থা যা, তাতে আরো কিছু ‘ক্লাস টেস্ট’ দেওয়ার সুযোগও নিশ্চিতভাবেই পাচ্ছেন তিনি। নভেম্বরের মাঝামাঝি পাঁচ দলের টি-টোয়েন্টি আসর আছে। স্থগিত হয়ে থাকা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও (ডিপিএল) গত মার্চে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়ক হিসেবেই শুরু করেছিলেন তিনি। ওয়ানডে নেতৃত্বের শুরুটাই শুধু বাকি আছে।

করোনা হানা না দিলে সেটিও শুরু হয়ে যেত গত ১ এপ্রিল। বাংলাদেশ দলের তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফরে করাচিতে একমাত্র ওয়ানডেটি নির্ধারিত ছিল সেদিনই। অথচ ওই দিন সমাগত হতে হতে ঘরবন্দি হয়ে যেতে হয়েছে তামিমসহ বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারকেই। এরপর আরো কত দিন যে পেরিয়ে গেছে এভাবে! মাঝখানে ঘর ছেড়ে বের হতে পেরেছেন যদিও। তবে এখন আবার এমন কঠোর বায়ো-বাবল বা জৈব সুরক্ষা বলয়ে আছেন যে হোটেল আর স্টেডিয়ামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ জীবনেও নেতৃত্বের রোমাঞ্চ আছে তামিমের। পেছন ফিরে তাকিয়ে মনে হচ্ছে, ‘‘করোনা এবার আমাকে সত্যিকারের ‘এপ্রিল ফুল’ বানিয়ে ছেড়েছে।’’

গত ১ এপ্রিল ওয়ানডে নেতৃত্বের অভিষেক না হওয়ার ব্যাপারটিকে অবশ্য এখন ইতিবাচক চোখেই দেখছেন তামিম। করোনার কারণে একের পর এক সিরিজ স্থগিত হয়ে যাওয়া কিংবা পুনর্নির্ধারিত হতে হতেও ভেস্তে যাওয়াকে শাপে বর বলে মনে হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন, ‘অবশ্যই এটি আশীর্বাদ। সরাসরি জাতীয় দলের হয়ে শুরু না করে এ রকম বেশ কিছু ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার আগে আমি যত বেশি এ রকম ম্যাচ খেলব, ততই আমার জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ থাকবে।’

সেই প্রস্তুতিও আজ শুরু হয়ে যাচ্ছে প্রেসিডেন্টস কাপ দিয়ে। এখানেও যথেষ্ট সিরিয়াস থাকার একাধিক যুক্তিও নিজেই নিজের সামনে দাঁড় করিয়েছেন, ‘দেখুন, নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আমি খুব অভিজ্ঞ নই। তাই আমার জন্য প্রতিটি ম্যাচই নতুন সুযোগ। সিরিয়াস না থাকার কোনো কারণ নেই। অধিনায়ক হিসেবে এ রকম যত বেশি ম্যাচ খেলব, আমি তত শিখতে থাকব। যত বড় অধিনায়কই হন না কেন, এটা এমন জিনিস যে আপনি ভুল করবেনই। তবে সেই ভুল কমানো যায়। ভুল থেকে শিক্ষা নিলে পরেরবার একই পরিস্থিতিতে হয়তো আমি সঠিক সিদ্ধান্তই নেব। সে জন্য ম্যাচ খেলা লাগবে।’

অবশ্য এ কথাও নির্দ্বিধায় স্বীকার করছেন যে, ‘অধিনায়কত্ব আগেও বিভিন্ন টুর্নামেন্টে এক-দুইবার করেছি। কিন্তু জাতীয় দলের নেতৃত্ব আলাদা জিনিস। তাই এটার সঙ্গে ওটার তুলনা করতে পারবেন না। ওটার প্রথম ম্যাচটি যেমন হবে, এই ম্যাচে হয়তো সেই অনুভূতিটা আসবে না।’ তা না এলেও শেখার অবারিত দুয়ারটা খোলাই দেখছেন তামিম, ‘তবে এই ম্যাচগুলো আমার জন্য খুব ভালো শেখার ক্ষেত্র হবে। নিজেও শিখতে পারবেন, অন্যদের দেখেও শিখতে পারবেন। কিছু পরিস্থিতি আসবে যেখানে সিদ্ধান্তগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এই মানসিকতা নিয়েই তাই নামছি, যেন এখান থেকে কিছু শিখতে পারি।’

আসল পরীক্ষার আগে তামিম তাই আপাতত ‘ক্লাস টেস্ট’-এর ভুবনেই ডুব দিচ্ছেন!


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর