শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের আহবান,নইলে দুটি মামলার হুশিয়ারি-কালিগঞ্জে ৯নং সেক্টরের উপ-অধিনায়ক লামা-চকরিয়া সড়কে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় চালক নিহত আটোয়ারীর প্রতিবন্ধী আখতারুল হাসান মানবেতর জীবনযাপন করছে দ্রুত অবসরভাতা প্রদানের দাবিতে গোপালপুরে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান আটোয়ারীতে ২৪-এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ঈশ্বরদীতে চাল মিলের বর্জ্য পানিতে ৪৫টি পরিবার অবরুদ্ধ  গোপালপুরে গণসংযোগে শাকিল উজ্জামান: “দুর্নীতিবাজদের বর্জন করুন, জনগণের ভরসা হতে চাই” সাতক্ষীরায় আব্দুল আলিমের মনোনয়নের দাবীতে সড়ক অবরোধ করে মশাল মিছিল

৪৮ জনের সঙ্গে কনডেম সেলে যুক্ত হলেন মিন্নি

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০, ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক: বর্তমানে দেশে ৪৯ জন নারী ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে বিভিন্ন কারাগারের কনডেম সেলের বাসিন্দা। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের থাকার এই সেলের সর্বশেষ বাসিন্দা হয়েছেন বরগুনার আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

গতকাল বুধবার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই কারাগারে আর কোনো নারী ফাঁসির আসামি না থাকায় তিনি একাই হয়েছেন কনডেম সেলের বাসিন্দা। জানতে চাইলে বরগুনা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ার হোসেন গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফাঁসির আসামি হিসেবে তাকে (মিন্নি) কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।’ তিনি জানান, এই কারাগারের নারী ইউনিটে ১৯ জন বন্দি ছিল। মিন্নিকে নিয়ে ২০ জন হলো।

দেশে সবচেয়ে বেশি নারী ফাঁসির আসামি রয়েছে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে। এই কারাগারের জেলার হাসনাত জাহান গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, কারাগারটিতে ২৩ জন ফাঁসির আসামি রয়েছে।

কিছুদিন আগে ২৪ জন ছিল, এর মধ্যে একজনের দণ্ড কমে যাবজ্জীবন হয়ে যাওয়ায় এখন ২৩ জন রয়েছে।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারগুলোতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে কেউ কেউ ১০-১৫ বছর ধরে কনডেম সেলের বাসিন্দা। দেশে বহু পুরুষ আসামির ফাঁসি কার্যকর হলেও কোনো নারী আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। এক কারারক্ষী জানান, তিনি ২৮ বছর ধরে চাকরি করছেন, আজ পর্যন্ত কোনো নারী আসামির ফাঁসি হয়েছে, এমন কথা শোনেননি।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের মধ্যে সবাই হত্যার দায়ে দণ্ডিত হয়েছে বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। কলহের জের ধরে নিজ পরিবারের কোনো সদস্যকে হত্যার দায়েই ফাঁসির দণ্ড পেয়েছে এদের বেশির ভাগ।

কারা সূত্র জানায়, প্রতিটি কনডেম সেল কমবেশি ১০ হাত দৈর্ঘ্য ও ছয় হাত প্রস্থের হয়। প্রতি সেলে তিন-চারজন করে ফাঁসির আসামিকে রাখা হয়। প্রতি সেলে গ্রিলঘেরা বারান্দা রয়েছে। ওই বারান্দাতেই তাদের হাঁটার সুযোগ মেলে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই তাদের থাকতে হয় সেলের ভেতর ও বারান্দায়। এক কারা কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন দুপুরে গোসল করার জন্য তাদের বের হতে দেওয়া হয়। গোসলের আগে সেলের আশপাশে ১৫-২০ মিনিট হাঁটার সুযোগ দেওয়া হয়। এভাবেই মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে তাদের।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা মাসে এক দিন সুযোগ পায় তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার। তখন তারা সেল থেকে বেরিয়ে কারাগারের গেটে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে।

সূত্র জানায়, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে একটি করে থালা, বাটি ও কম্বল। এর বাইরে আর কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই।

ফাঁসি কার্যকর হয়নি কারো : এক হিসাবে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে শতাধিক নারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন কারা ভোগ করার পর বেরিয়ে গেছে, কেউ কেউ মারা গেছে, কারো কারো আপিলে শাস্তি কমেছে।

মা-বাবাকে হত্যা করে কনডেম সেলের বাসিন্দা হয়েছিলেন পুলিশের কন্যা ঐশী। পরে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় কনডেম সেল থেকে মুক্তি পান।

২০০৭ সালে কাশিমপুরে একমাত্র মহিলা কারাগার উদ্বোধন করা হয়। দেশের প্রতিটি কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ থাকলেও সেখানে কোনো ফাঁসির মঞ্চ নেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তত্কালীন আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন, অতীতে কোনো নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের রেকর্ড না থাকায় ফাঁসির মঞ্চ বানানো হয়নি।

কারাগারে ২২ বছর ধরে চাকরি করেন এমন এক কর্মকর্তা জানান, নিয়মানুযায়ী ফাঁসির আসামিরা সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে। রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা না করলে ফাঁসি থেকে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। তবে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে, এমন খবরও তিনি শোনেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর