বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

বরিশালে করোনা পরীার সমতা বেড়েছে বহুগুন

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০, ৬:০৮ অপরাহ্ণ

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়া বরিশাল তথা দণিাঞ্চলের রোগীদের কোভিড-১৯ পরীার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে আরটি-পিসিআর ল্যাব। গত ৯ এপ্রিল ধার করা টেকনোলজিস্টদের নিয়ে পরীামুলকভাবে শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯ পরীার কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে গত এক মাসের ব্যবধানে নমুনা সংগ্রহের পরিমান বৃদ্ধির সাথে সাথে ল্যাবটিতে পরীা কার্যক্রমে বেড়েছে সমতাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ল্যাবের সমতা বৃদ্ধিতে নতুন একটি সেফটি কেবিনেট সংযুক্ত হয়েছে। যে কারণে গত সপ্তাহে মোট ৮শ ৪২ জনের পরীা করা সম্ভব হয়েছে। যারমধ্যে চারদিনে ১৪০ জন করে এবং তিনদিনে ৯৪ জন করে নমুনা পরীা করা সম্ভব হয়েছে। অথচ শুরুতে প্রতিদিন মাত্র ২২ থেকে ২৫ জনের নমুনা পরীা করা সম্ভব ছিলো। এখন নমুনার সাথে সাথে পরীার সমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, পরীা কার্যক্রম শুরুর এক মাস অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি জনবল সংকটের সমাধান হয়নি। তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করে আনা সাতজন টেকনোলজিস্ট দিয়েই চলছে আরটি-পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীা কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী সংকট মোকাবেলার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাবে দ টেকনোলিজস্ট নিয়োগ বা পদায়নের দাবি করেছেন বিভাগটির দায়িত্বরতরা। অন্যথায় মুখ থুবরে পরতে পারে কোভিড-১৯ পরীার কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় আট বছর পূর্বে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে সংযুক্ত করা হয় ভাইরোলজি বিভাগ। বিভাগটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন সহকারী অধ্যাপক এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক টেকনোলজিস্টের পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পরে বিভাগটির জন্য কোন চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট, পরীা নিরীার যন্ত্রপাতি এমনকি ল্যাব পর্যন্ত স্থাপন হয়নি। এরইমধ্যে হঠাৎ করে দেশে করোনাভাইরাস হানা দেওয়ায় গুরুত্ব বেড়ে যায় ভাইরোলজি বিভাগের। তবে এ বিভাগটিতে জনবল সংকটের কারণে মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধীনে শুরু হয় করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীার কার্যক্রম। এজন্য ওই বিভাগের একটি পরিত্যক্ত কে স্থাপন করা হয় কোভিড-১৯ পরীার আরটি-পিসিআর ল্যাব। তবে ল্যাব স্থাপন হলেও সংকট দেখা দেয় টেকনোলজিস্টের। তারমধ্যেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেডিক্যাল কলেজসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে টেকনোলজিস্ট এনে শুরু করা হয় পরীা কার্যক্রম।

আরটি-পিসিআর ল্যাবের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ একেএম আকবর কবির বলেন, করোনা ভাইরাস পরীা নিরীার বিষয়টি মূলত ভাইরোলজি বিভাগের। কিন্তু আমাদের এখানে নামে মাত্র বিভাগটি থাকলেও পূর্বে থেকেই কোন কার্যক্রম ছিলোনা। এ কারণে দেশের এই চরম পরিস্থিতিতে তড়িঘরি করেই মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধীনে কোভিড-১৯ এর পরীা শুরু করা হয়।
তিনি বলেন, পরীা নিরীার মূল কাজটি করে থাকেন টেকনোলজিস্টরা। কিন্তু আমাদের এখানে টেকনোলজিস্টের সংকট রয়েছে। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে দুই জন মাত্র টেকনোলজিস্ট আছেন। তারা কোভিড-১৯ পরীার বিষয়ে অভিজ্ঞ নয়। ওই দুইজন এবং শেবাচিম হাসপাতাল ও পার্শ্ববর্তী আইএইচটি থেকে আরও পাঁচজনসহ মোট সাতজনকে নিয়ে পিসিআর ল্যাবে কাজ চলছে। এদেরকে মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা মাত্র এক সপ্তাহের প্রশিণ দিয়েছেন।

সূত্রমতে, প্রতিদিন দুই শিফটে পাঁচজন করে টেকনোলজিস্ট কাজ করেন। কাজের ফাঁকে তাদের বিশ্রাম নিতে সহযোগিতা করছেন অপর দুইজন। এরা পরীার পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহের কাজও করে থাকেন। এমনি করে সংকটের মধ্যেই গত ৯ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত টানা এক মাসে দুই হাজার ২৫০টি নমুনা পরীা করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে পরীামূলকভাবে কাজ শুরু করা টেকনোলজিস্টদের কার্যমতা আগের চেয়ে অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতিদিন ১৪০ জনের নমুনা পরীা করা সম্ভব। এটা করতে হলে প্রতিদিন পিসিআর মেশিনে ডাবল লোড দিতে হবে। যে চারদিন ১৪০ জন করে পরীা করা হয়েছে সেদিনগুলোতে ডাবল লোড দিয়েই করা হয়েছে। আর ডাবল লোড দিয়ে পরীা করতে হলে জনবলের চেয়েও বেশি প্রয়োজন দ টেকনোলজিস্টের। এখন যারা আছেন তাদের দিয়ে কাজ করাতে হলে অনেক বেশি সময় লেগে যায়। তাই ভাইরোলজি ল্যাবে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন টেকনোলজিস্টদের শেবামেকের পিসিআর ল্যাবে পদায়ন করা জরুরী হয়ে পরেছে।

এ ব্যাপারে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্য সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ এসএম সারওয়ার বলেন, আমাদের মেডিক্যাল কলেজে পূর্বে থেকেই টেকনোলজিস্ট সংকট। বর্তমানে সববিভাগ মিলিয়ে ১২ জন টেকনোলজিস্ট রয়েছে। পিসিআর ল্যাবে দ টেকনোলজিস্টের পাশাপাশি ভাইরোলজি বিভাগে চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন পাঠানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর