ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের ৫৬ নং বড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র সংকট এমন পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকরা পরীক্ষা নিতে গেলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকিয়া আক্তারের দায়িত্বহীন অবস্থানকে কেন্দ্র করে পরীক্ষাকেন্দ্রে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা, এতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময় বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই পরীক্ষা দিতে উচ্ছ্বাস নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। কিন্তু পরীক্ষার সময় পেরিয়ে গেলেও পরিক্ষা শুরু হয় নি। গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। তারা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সরাসরি জানান, “আমি প্রশ্ন করিনি।” তাঁর এই বক্তব্যে আরও জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকরা হতবাক হয়ে পড়েন।
স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা স্কুলে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক প্রশ্নপত্র সংগ্রহ না করায় এবং বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত কোনো প্রশ্ন না থাকায় পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। প্রশ্নপত্র ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে তারা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে ফিরেন৷
স্বেচ্ছাসেবক ও মানবাধিকার কর্মী শাফায়েত আহমেদ বলেন সকালে পরীক্ষা দেখতে স্কুলে যাই গিয়ে দেখি সেখানে কোন ছাত্র-ছাত্রী নাই ওরে অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি শিক্ষকরা ছাত্রদেরকে বলেছেন আজও তোমাদের পরীক্ষা হবে না! আজ তোমাদের ছুটি।
পরে গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক রা গ্রামবাসী সাথে কথা বলে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে নিয়ে আসে।উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রশ্নপত্র চাইলে তিনি বলেন আমি প্রশ্ন করিনি। প্রশ্ন না থাকায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সন্তানরা পরীক্ষা দিতে এসেছে। কিন্তু শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন না করায় তারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। এটা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক।” তারা আরও দাবি করেন, প্রধান শিক্ষকের এমন দায়িত্বহীন আচরণ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকিয়া আক্তার বলেন, আমরা পরীক্ষা নিচ্ছি না সারাদেশে আন্দোলন চলছে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা নিব না এ বিষয়ে আমরা অটল।
“পরীক্ষার পরিবেশ ও দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি হয়েছে। প্রশ্নপত্র সময়মতো পাওয়া যায়নি। তাই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
অন্যদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সব বিদ্যালয়ে একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কোনো বিদ্যালয় সেই নির্দেশনা পালন না করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে গুলোর তালিকা করা হচ্ছে।