টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের মামুদনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার(১১ নভেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ঐতিহাসিক তাফসিরুল কুরআন মাহফিল।
মামুদনগর আদর্শ সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এ মাহফিলে দেশের আলোচিত ইসলামিক চিন্তাবিদ ও প্রখ্যাত বক্তা অধ্যক্ষ মোশতাক ফয়েজী পীর সাহেব প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে পবিত্র কুরআনের আলোকে মনোমুগ্ধকর তাফসির পেশ করেন।
মাহফিলকে ঘিরে সকাল থেকেই এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মাঠজুড়ে বিশাল প্যান্ডেল, মনোরম আলোকসজ্জা ও আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমে সজ্জিত ছিল পুরো অনুষ্ঠানস্থল। নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক বসার ব্যবস্থা থাকায় ধর্মপ্রাণ মানুষ নির্বিঘ্নে তাফসির ও ইসলামী আলোচনা উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মামুদনগর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাসুদ হাসান। উদ্বোধন করেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. গোলাম মওলা। প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী মনোনীত টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের এমপি প্রার্থী ডা. একেএম আব্দুল হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগরপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব জামায়াতের সভাপতি ডা.এম.এ.মান্নান,উপজেলা জামায়াতের সহ সেক্রেটারি হাফেজ আজিম উদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এর সহ সভাপতি মো আব্দুল রশীদ হারুন,উপজেলা যুব জামায়াতের ক্রীড়া সম্পাদক ব্যারিষ্টার হাসনাত জামিল,উপজেলা যুব জামায়াতের অফিস ও মিডিয়া সম্পাদক মো.আব্দুস সবুর,নাগরপুর উপজেলা ছাত্রশিবির এর সাবেক সভাপতি মো.মাইন উদ্দিন, নাগরপুর সদর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো.মিজানুর রহমান,বেকড়া ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা ছামিনুর রহমান,মামুদনগর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো.ইউসুফ,ইউনিয়ন যুব সভাপতি মো.লুৎফর রহমান প্রমূখ।
প্রধান বক্তা অধ্যক্ষ মোশতাক ফয়েজী পীর সাহেব তাঁর হৃদয়স্পর্শী তাফসিরে বলেন, “কুরআন হচ্ছে মানুষের জীবন পরিচালনার সর্বোত্তম দিকনির্দেশনা। আমরা যদি আল্লাহর বাণীকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করি, তবে সমাজ থেকে অন্যায়, অশান্তি ও অবিচার দূর হবে।” তাঁর বয়ান শ্রোতাদের মাঝে গভীর প্রভাব ফেলে, মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ।
প্রধান অতিথি ডা. একেএম আব্দুল হামিদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই তাফসির মাহফিল আমাদের আত্মিক জাগরণের বার্তা দেয়। আমাদের সমাজে কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম—এই বার্তাই আমরা মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিতে চাই। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের ধর্মীয় আয়োজন সমাজে নৈতিকতা ও মানবিকতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাহফিলের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবক দল মাঠে দায়িত্ব পালন করে। পুরো অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজকের মাহফিলে কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উপস্থিতিতে এটি এক ব্যতিক্রমধর্মী ধর্মীয় সমাবেশে পরিণত হয়েছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা—এই মাহফিলের মাধ্যমে সমাজে কুরআনের শিক্ষা আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং মানুষ আল্লাহর পথে ফিরে আসবে,ইনশাআল্লাহ ।