দীর্ঘ ১৬ বছর ঝুলে থাকার পর অবশেষে সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী শুক্রবার (৭ নভেম্বর)। প্রতিষ্ঠানটিতে ৭টি শূন্য পদে মোট ১৬০ জন আবেদন করেছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১৪১ জন প্রার্থীকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। একই দিন পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করা হবে।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলের ভিত্তিতে মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়নে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ২ জন এবং ফকিহ, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, গবেষণাগার ল্যাব সহকারী, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশপ্রহরী ও আয়া পদে একজন করে মোট ৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করবে বোর্ড।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। “আমরা চাই, দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে,” বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, অব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকট দূর করতে ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর মুহাদ্দিস মুহাম্মদ আব্দুল খালেককে সভাপতি করে নতুন গভর্নিং বডি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক ও কর্মচারী মিলিয়ে ১৩ জন নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে ৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখে দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উপাধ্যক্ষ পদে ৮ জন, ফকিহ পদে ৩ জন, ইবতেদায়ী প্রধান পদে ৬ জন, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ২৮ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ৪১ জন, গবেষণাগার ল্যাব সহকারী পদে ৪২ জন, নিরাপত্তা কর্মী পদে ৮ জন, নৈশপ্রহরী পদে ৬ জন এবং আয়া পদে ১৮ জনসহ মোট ১৬০ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১২ অক্টোবরের নির্দেশনা অনুযায়ী অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও ইবতেদায়ী প্রধান পদে নিয়োগ কার্যক্রম এনটিআরসির মাধ্যমে হওয়ায় ওই পদগুলো বাতিল করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় আরও ৫ জনের আবেদন বাতিল করা হয়।
চূড়ান্তভাবে ১৫৫ জনের আবেদন বৈধ ঘোষণা করে নিয়োগ বোর্ড। এর মধ্যে ১৪১ জন প্রার্থীকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
মাদ্রাসার সভাপতি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার বজায় থাকবে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই প্রার্থী বাছাই করা হবে। নিয়োগে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন বা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও সতর্ক করেন, “যারা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”