শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

পীরগন্জ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারির বিরুদ্ধে একাধিক দপ্তর কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারি বকুল আলমের  বিরুদ্ধে স্যানেটারি ইন্সপেক্টরের পদ সহ একাধিক পদ ধরে রেখে অবৈধ সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে।প্রাক্তন প্রধান অফিস সহকারী মাইজুল হকের যোগসাজসে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংগ্রহ,সংরক্ষন,ওষুধ বিতরণ ও কর্মকর্তার সরকারি মোটর সাইকেল অবৈধভাবে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে,গত ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারি পদে যোগদান করেন মো : বকুল আলম ।বিধি মোতাবেক তার দৈনন্দিন কাজ হচ্ছে  নিয়মিত টিকাদান বা  ইপিআই কার্যক্রম পরিচালনা  করা।কিন্তু তিনি টিকা প্রদান কাজ না করে প্রাক্তন প্রধান অফিস সহকারী মাইজুল হকের যোগসাজসে অবৈধভাবে অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার অপারেটর,স্যানেটারী ইন্সপেক্টর,স্টোর কিপার,পরিসংখ্যানবিদ সহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো  দখল করে আছেন।
এই হাসপাতালে জান্নাতুন ফেরদৌস নামে একজন স্টোর কীপার থাকলেও তিনি স্টোরের ওষুধ,স্যালাইন,সহ অন্যান্য মালামাল তাকে বুঝে  না দিয়ে বকুল আলম  সবকিছু দেখভাল করেন।এতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা সময় মতো প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না এবং  কর্মচারীরা যাবতীয় মালামাল চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ পাচ্ছেন না। এ হাসপাতালে অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার অপারেটর পদে দুলালী খাতুন সহ ৩জন কর্মরত থাকলেও অফিসিয়াল চিঠিপত্র সংগ্রহ,সংরক্ষন,কম্পোজ,প্রিন্ট ,সহ বিভিন্ন দপ্তরে পত্র প্রেরণের কাজ বকুল আলম অবৈধভাবে করে থাকেন ।এতে সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে পেরে তিনি সংশ্লিষ্ট চিঠপত্র হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও পরিসংখ্যানবিদ পদে আরমিনা খাতুন নামে একজন কর্মরত থাকলেও বকুল আলম নিজেই পরিসংখ্যানের কাজ করে থাকে।তিনি  একজন স্বাস্থ্য সহকারি হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ ছাড়াই  অবৈধভাবে স্যানেটরী ইন্সপেক্টর হিসেবে বিভিন্ন হাট বাজার ও দোকান পাট পরিদর্শন করে আসছেন।শুধু তাই নয়,গ্রামের ছোট খাট চায়ের দোকানদার থেকে শুরু করে দুধ বিক্রেতার নিকট মাসোহারা  আদায় করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। খাদ্য স্থাপনা পরিদর্শন, দৈনন্দিন রিপোর্ট প্রদান, খাদ্য নমুনা সংগ্রহ ও ল্যাবে প্রেরণ, নমুনা ভেজাল হলে আদালতে মামলা দায়ের, পচা-বাঁসি ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য জব্দ ও ধ্বংস করা, সংক্রামক রোগের কারণ অনুসন্ধান, স্কুল ও কমিউনিটিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান ইত্যাদি কাজ স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের অভাবে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সহকারি বকুল আলম হাসপাতালের কোন গুরুত্বপূর্ন পদে না থাকলেও অবৈধভাবে  স্বাস্হ্য প.প. কর্মকর্তার সরকারি বরাদ্দকৃত মোটর সাইকেল ( রেজিঃ নম্বরঃ- ঠাকুরগাঁও  হ- ১১-৫০৪৯)  ব্যাক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।বাড়ি হতে অফিসে আসা যাওয়া সহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করেন ওই মোটর সাইকেল।
এদিকে ২৮ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদুক) পীরগন্জ হাসপাতালে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়।দুদকের অভিযানে প্রধান অফিস সহকারী মাইজুল হকের বিরুদ্ধে বহুবিধ অনিয়ম ও ওষুধ বিতরণে রেজিষ্টার ব্যবহার না করায় দুদকের তোপের মুখে পড়েন এবং তাকে পার্শবর্তী  রাণীশংকৈল উপজেলা হাসপাতালে বদলী করা হয়।
এ ব্যাপারে বকুল আলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি।
এ ব্যপারে হাসপাতালের স্বাস্হ্য প.প.কর্মকর্তা ডা: আব্দুল জব্বার জানান, এই হাসপাতালে স্যানেটারী ইন্সপেক্টর পদে কোন লোক না থাকায় বকুল আলম মোবাইল কোর্টে নিহে হাজির থাকে এবং নিজেকে স্যানিটারী অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয়।প্রকৃতপক্ষে সে ওই পদের কেউ নন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর