বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বেনাপোল চেকপোষ্ট এলাকায় পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবায় কর্মরত “কুলি” শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে,তাদের’কে ছাটাই এবং “গ্রীণ লজিষ্টিক” নামের এক কোম্পানী’কে কাজ করার অনুমতি প্রদান করার প্রতিবাদে,সেখানকার “কুলি” শ্রমিক ইউনিয়ন(রেজিঃ নং-২০৮৪,খুলনা) এক “মানববন্ধন” কর্মসূচি
পালণ করে। এ সময় শ্রমিকদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
শুক্রবার(১৯ সেপ্টেম্বর/২০২৫) সকাল ১০টায় দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতীক চেকপোষ্ট বেনাপোল “প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল” সম্মুখে উক্ত “মানববন্ধন” কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত “মানববন্ধন” কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি-মো.মোবারক হোসেন(কালু) ও সাধারণ সম্পাদক-মো.ইকরামুল।
এ ছাড়াও সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে অংশ নেন-মো.জাহাঙ্গীর(সহঃ সভাপতি),মো.ইয়ানুর রহমান(সহঃ সাধারণ সম্পাদক),মো.আরিফুল ইসলাম(সাংগঠনিক সম্পাদক),মো.মিন্টু বিশ্বাস(কোষাধ্যক্ষ),মো.জুলফিকার আলী(দপ্তর সম্পাদক),মো.বল্টু মিয়া(প্রচার সম্পাদক) এবং কার্যনির্বাহী সদস্য-দ্বীন ইসলাম, শ্রমিক নেতা-আব্দুল মালেক ও মো. ইমরান হুসাইন গাইন সহ সংগঠনটির সকল কুলি শ্রমিকবৃন্দ।
মানববন্ধনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন-“কুলি’দের বিরুদ্ধে দুর্ণীতির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ “গ্রীণ লজিষ্টিক” নামের এক ব্যবসায়ীক কোম্পানী’কে চেকপোষ্ট এলাকায় কাজ করার যে অনুমোদন দিয়েছে,আমরা সেই নির্দশনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই, আমরা সাধারণ কুলি মুজুর,দিন আনি দিন খাই অর্থাৎ অত্র চেকপোষ্ট এলাকায় পাসপোর্ট প্যাসেঞ্জারদের ব্যাগ এবং ল্যাগেজ বহন করে যে পারিশ্রমিক পায়,তাই দিয়ে আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা-দু’মোঠো ভাত খেয়ে বেঁচে আছি, আমাদের এই কাজের মধ্যে দূর্ণীতির সুযোগ কোথায়? কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দৃড় কন্ঠে বলেন,যারা দূর্ণীতিবাজ তাদেরকে ধরার চেষ্টা করেন, ৩০০ কুলি-শ্রমিকের কর্ম ছিনিয়ে নিয়ে আমাদেরকে বেকারত্বে ঠেলে দিবেন না। আমাদের মধ্যে যদি কেউ অপরাধ করে থাকে,তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে আমাদের কোন অভিযোগ থাকবে না। গত ৫ আগষ্ট/২০২৪ এর গণঅভ্যুনের পর,ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের যে সমস্ত দলীয় নেতা-কর্মী এই চেকপোষ্টে গ্রেফতার হয়েছে,অধিকাংশ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী’কে সহায়তা করেছে আমরা এবং আমাদের কুলি সদস্য ভাইয়েরা”।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত বীর শহীদ আব্দুল্লাহ আমাদের শ্রমিক পরিবারের সন্তান। আমাদের এই সামান্য আয়ের মধ্যে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে’দেরকে উচ্চ-শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি,সে ক্ষেত্রে আমাদের এই কুলি’র কাজ চলে গেলে আমরা অসহায় হয়ে পড়বো। অতএব,বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকদের বিনীত অনুরোধ, অনুমোদীত নির্দেশনা বাতিল এবং শর্তসমূহ প্রত্যাহারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন,শ্রমিকগণ এই প্রত্যাশা করে”।
নেতৃবৃন্দ বলেন,গত ৫ আগষ্ট/২০২৪ পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী’র চলাচল একেবারে নেই বললে চলে। সে ক্ষেত্রে “গ্রীণ লজিষ্টিক”র ফতোয়া কতটা কার্যকরী হতে পারে তা কর্তৃপক্ষ’কে ভাবতে হবে। তারা যে হারে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াতের উপর “কর” আরোপ করেছে,তাতে যাত্রীরা মানতে নারাজ। অধিকতর “কর” চাপিয়ে যাত্রী যাতায়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে বাধা সৃষ্টি করছে,তা থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।
২৪ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখ বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক মো.শামীম হোসেন(উপসচিব) স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখিত “গ্রীণ লজিস্টিকস” এর প্রস্তাবিত সার্ভিস চার্জ (টাকা)-
স্বাগত সহায়তা চার্জ-১৫০/-
লাগেজ র্যাপিং সার্ভিস চার্জ-১৫০/-
ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস চার্জ-১০০/-
জরুরি সহায়তা চার্জ-৫০/-
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যাত্রীদের সহায়তা চার্জ-২০০/-
২৪/৭ সহায়তা চার্জ-৫০/-
ডিজিটাল সুবিধা চার্জ-৫০/-এবং
সেবা চার্জ-২০০/- টাকা।
এদিকে,ভারত গামী পাসপোর্টধারীরা জানান, ভ্রমন কর সরকার ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করেছে। ভারত সরকার ভিসা ফি ১৫০০ টাকা নিচ্ছে। বন্দর সেবা চার্জ নাম করে পাসপোর্ট প্রতি ৫৫ টাকা আদায় করছে। তবে কাঙ্খিত কোন সেবা বন্দর দিতে পারেনা। এর মধ্যে নতুন করে আবার একাধিক সেবা চার্জ নির্ধারন গলা কাটা পড়বে যাত্রীদের।