যশোরের অভয়নগর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর মোহরার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সেবা গ্রহীতার কাছে অবৈধভাবে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা চাওয়ার প্রতিবাদ করায় সাব রেজিস্ট্রার ইকবাল হুসাইনকে লাঞ্চিত করার ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ঘটনা জানাজানি হলে সেবাগ্রহীতা ও দলিল লেখকদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকরা উপস্থিত হয় সাব রেজিস্ট্রার অফিসে।
অভিযোগকারী সেবা গ্রহীতা আঁখি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তিনি নওয়াপাড়া বাজারে সার ও কয়লা ব্যবসা করেন। ঘটনার দিন বুধবার দুপুরে সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দলিল সংক্রান্ত কাজ শেষে বেরিয়ে যান তিনি। পথিমধ্যে ওই কার্যালয়ে কর্মরত মোহরার রফিকুল ইসলাম তার সঙ্গে দেখা করেন এবং চারটি দলিলের জন্য চার হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ সময় তিনি মোহরারকে সঙ্গে নিয়ে সাব রেজিস্ট্রার ইকবাল হোসেনের কার্যালয়ে গিয়ে টাকা চাওয়ার কারণ জানতে চান। সেবা গ্রহীতার নিকট অবৈধভাবে কেনো টাকা চাওয়া হয়েছে এর কারণ জানতে চাইলে মোহরার রফিকুল সাব রেজিস্ট্রারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঞ্চিত করেন।
সেবা গ্রহীতা আরো বলেন, ‘এই প্রথম একজন সাব রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা সরকার নির্ধারিত টাকা ছাড়া দলিলের কাজ সম্পন্ন করেছেন। অথচ ঘুষ চাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে তিনি তাঁর অধিনস্ত কর্মচারীর নিকট লাঞ্চিত হলেন। যা দুঃখজনক ঘটনা। মোহরার রফিকুলের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।’
অভিযুক্ত মোহরার রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নকল নবিশদের জন্য সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে খরচের জন্য কিছু টাকা নেওয়া হয়। আর সাব রেজিস্ট্রার স্যারের সঙ্গে আমার তেমন কিছু ঘটেনি। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউজ না করার জন্য টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও করেন তিনি।’
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার ইকবাল হুসাইন বলেন, ‘আমি যোগদানের পর দুর্নীতিমুক্ত কার্যালয় ঘোষণা করেছি। মোহরার রফিকুল ইসলাম একজন সেবা গ্রহীতার (আঁখি এন্টারপ্রাইজ) নিকট কেনো টাকা চেয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমার সঙ্গে খরাপ আচরণ করেন। তাঁর এহেন কর্মকান্ডর জন্য দাপ্তরিকভাবে কারণ দর্শাণোর নোটিশ প্রদাণের প্রক্রিয়া চলছে। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলার একাধিক সচেতন নাগরিক ওই ঘুষখোর মোহরার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন। এবিষয়ে নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক আমাদের সাবরেজিস্টার ইকবাল সাহেব খুবই ভালো মানুষ ওই অফিসের ঘুষখোর রফিকুল ইসলাম অফিসে যোগদান করার পর থেকে ঘুস নিতে পারছেনা বলে বিভিন্ন সময় সাব-রেজিস্ট্রার ইকবাল সাহেবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে আমরা তার বিরুদ্ধে ৫০ জন স্বাক্ষরিত জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করছি।