জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে সফল মাছচাষী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খ্যাতনামা মাছচাষি শাহীনুর রহমান। আধুনিক পদ্ধতিতে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে মাছচাষ করে তিনি শুধু এলাকায় নয়, পুরো জেলায় সুনাম অর্জন করেছেন।
শাহীনুর রহমানের মাছের খামারে প্রধানত কার্প জাতীয় মাছ চাষ করা হয়। প্রতিবছর তিনি প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করেন। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও তিনি মাছ সরবরাহ করেন। তাঁর এই সাফল্য স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বেকার যুব সমাজের মধ্যে মাছচাষে আগ্রহ তৈরি করছে। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে শাহীনুর রহমান এ অঞ্চলে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর খামারকে এখন অনেকেই মডেল হিসেবে বিবেচনা করছেন।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শাহীনুর রহমানকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে শাহীনুর রহমান বলেন, “আমাদের চলনবিল অঞ্চল এক সময় প্রাকৃতিক মাছের ভান্ডার ছিল। সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে অবৈধভাবে মাছ ধরা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে নিষিদ্ধ চায়না জাল, কারেন্ট জালসহ সব ধরনের অবৈধ সরঞ্জাম ব্যবহারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মাছচাষ একটি সম্ভাবনাময় খাত। সঠিক নিয়মে খামার পরিচালনা করলে এটি লাভজনক হয়। সরকারের সহায়তা ও আমার নিজের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের কারণেই আজ আমি এ সম্মান অর্জন করেছি। যুব সমাজ চাইলে মাছচাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।”
স্থানীয় খামারিদের উন্নতির স্বার্থে তিনি দাবি জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সরকারি উদ্যোগে নিয়মিত কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর বিশ্বাস, এমন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শুধু ভাঙ্গুড়া নয়, গোটা চলনবিল অঞ্চলের মাছচাষে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
শাহীনুর রহমানের এই অর্জন স্থানীয় যুব সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর খামার এখন মাছচাষে আগ্রহীদের কাছে শিক্ষণীয় জায়গা। স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ ও সরকারি স্বীকৃতি অন্যদেরও মাছচাষে উৎসাহিত করবে।