বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

পাকুন্দিয়া রাস্তার বেহাল দশা, দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ১:৪৮ অপরাহ্ণ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রয়েছে গ্রামীণ একটি রাস্তা। উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীকান্দা গ্রামের ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাফেরা করে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে থাকে কর্দমাক্ত। তখন যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না। এতে যাত্রীদের চলাচলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। রাস্তাটি সংস্কার কিংবা পাকা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক স্থানীয় বাসিন্দা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুখিয়া ইউনিয়নের আশুতিয়া-সুখিয়া পাকা সড়কের কাওয়ালীকান্দা পশ্চিমপাড়া মোঃ নুরুল ইসলামের বাড়ি সংলগ্ন মোড় থেকে একটি রাস্তা রুকুন উদ্দিন মেম্বারের বাড়ির সামনে দিয়ে হাজী ইমাম উদ্দিন মেম্বারের বাড়ির দিকে গেছে। রাস্তাটি ওই মোড় থেকে রুকুন উদ্দিন মেম্বারের বাড়ি হয়ে হাজী ইমাম উদ্দিন মেম্বারের বাড়ি মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার। রাস্তার পুরো অংশই কাঁচা। রাস্তাটি প্রায় দশ থেকে তের ফুট প্রশস্ত। এই পথে প্রতিদিন সাইকেল, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাফেরা করছে। তাছাড়া প্রতিদিন এ পথে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত সবজি বাজারে আনা-নেওয়াও করেন এই পথে। এই পথের বিভিন্ন অংশে রয়েছে ছোট বড় গর্ত। বর্ষা মৌসুমে এসব গর্তে পানি জমে যায়। এতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। তখন যান চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তায় পানি জমে কাদা হয়ে থাকে।
সাবেক মেম্বার রুকুন উদ্দিন জানান, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কাওয়ালীকান্দা ফুরকানিয়া মাদ্রাসা, কাওয়ালীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাওয়ালীকান্দা পশ্চিমপাড়া হাজী নিজাম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রওজাতুল বানাত কওমি মহিলা মাদ্রাসা, দারুল ঊলুম মাদ্রাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ কাওয়ালীকান্দা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ, বায়তুন নুর জামে মসজিদের মুসল্লী সহ  ঠুটারজঙ্গল, চরপলাশ, খলিশাখালী, বিশ্বনাথপুর গ্রামের শতশত মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী। সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে কাদাময় হয়ে যায়। এতে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারীরা চরম দুর্ভোগে চলাফেরা করছেন।
কাওয়ালীকান্দা গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান (লতু) জানান, এই রাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে দ্বিগুণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়কটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় চলাচলকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইতিপূর্বে কয়েক বার সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলেও রাস্তাটি দেখতে আসবে বলেও এখনি অবধি আসেনি।
উক্ত গ্রামের মিজান মিয়া বলেন, ‘রাস্তাটি সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। নির্বাচন আসার আগে অনেক প্রার্থীই রাস্তাটি সংস্কার করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু পরবর্তীতে কেউ আর কোনো খোঁজখবর নেন না। সারা দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। কিন্তু এ রাস্তা দেখলে মনে হয়, অনেক পিছিয়ে আছি আমরা। রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কথা জানিয়ে সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করলেও এখনো পর্যন্ত কোন সমাধান পাইনি।’
ভুক্তভোগী নাসির উদ্দিন জানান, রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটিই আমাদের চলাচলের একমাত্র পথ। রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
একই গ্রামের আবু বাক্কার সিদ্দিক নামের একজন পথচারী বলেন, ‘আমি এ পথ দিয়ে প্রায়ই চলাফেরা করি। ব্যাটারি চালিত অটো গাড়ি চালিয়ে তারাকান্দি কাঁচাবাজারে কৃষিপণ্য নিয়ে যাই। গ্রামীণ এ পথটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পথ ব্যবহার করে এই এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে যান। কিন্তু রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত ও গর্ত থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তাটি সংস্কার বা পাকা করা হলে স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ কমবে।’
ভুক্তভোগী মোঃ স্বপন হোসেন বলেন, ‘জনমানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী কৃষকদের দুর্ভোগের কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইলে এবং সরাসরি যোগাযোগ করেছি। যেখানে বেশি সমস্যা সেখানে অন্ততপক্ষে ইটের সলিং বসানোর ব্যবস্থা বা সংস্কার করতে। অবশেষে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত ১৯/০৬/২০২৫খ্রিঃ তারিখে দরখাস্ত করেছি। এবং গত ১০/০৭/২০২৫খ্রিঃ তারিখে রাস্তাটি সংস্কার ও ইটের সলিং বসানোর জন্য সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরও আরেকটি দরখাস্ত জমা দিয়েছি। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে পানি জমে থাকে এবং গর্ত ও কর্দমাক্ত সৃষ্টি হয়ে এলাকাবাসীর চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এটিই আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ। রাস্তার এই বেহাল দশায় আমরা খুবই কষ্ট আছি। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
এলাকাবাসীর দাবী, যথ দ্রুত সম্ভব রাস্তাটি পাকাকরণ/ইটের সলিং বসানো হলে জন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে এলাকার মানুষ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর