বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

স্কুলের শিক্ষার্থীদের পিকনিকের কথা বলে আদালতে নিয়ে গেলেন প্রধান শিক্ষক!

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৩৫ অপরাহ্ণ

পাবনার চাটমোহরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পিকনিকের কথা বলে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে আদালতে একটি মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ালেন প্রধান শিক্ষক।

উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের পাচুড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে অভিভাবক ও এলাকাবাসী। পরে সন্ধ্যায় বিদ্যালয় চত্বরে অভিভাবক ও শিক্ষক পক্ষের মধ্যে বাঁকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে সকল ছাত্র ছাত্রীদের তিনটি বাস ভাড়া করে পাবনা শহর অভিমুখে রওনা হন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ। ছাত্রছাত্রীদের পাবনা রানা ইকো পার্কে পিকনিকের গন্তব্য থাকলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে যান পাবনা আদালতে। এরপর সেখানে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছে মতো বয়ান শিখিয়ে দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিতে বলেন।

দীর্ঘ সময় আদালত প্রাঙ্গনে অবস্থান করায় অনেক ছাত্র ছাত্রীরা ভয়ে আতংকিত হয়ে পরে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে বাড়িতে ফোন করে তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি এলাকার সকল অভিভাবকদের এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সবাই ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার পর অভিভাবক ও শিক্ষক পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে

শফিকুল ইসলাম ও সালমা খাতুন নামের দুই অভিভাবক জানান, তাদের মেয়ে এই বিদ্যালয়ে একজন ক্লাস টেনে ও আরেকজন ৮ম শ্রেনীতে পড়ে। কয়েকদিন আগে মেয়ে বললো আমাদের স্কুল থেকে স্যারেরা পিকনিকে নিয়ে যাবে, এজন্য দুই’শ টাকা চাঁদা নিয়েছে। আমরা জানতে পারলাম হেড মাস্টার ছেলে মেয়েদের পাবনা কোর্টে নিয়ে গেছে। বিষয়টি জানার পরে আতংকিত হয়ে পড়েছি। পিকনিকের কথা বলে কোর্টে কেন নিয়ে গেল মেয়েদের। আমরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।

মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিদ্যালয়ের মেয়েদের ইভটিজিং করার ঘটনায় কয়েকমাস আগে চাটমোহর থানায় আমি একটি অভিযোগ দায়ের করি। বর্তমানে অভিযোগটি পাবনা কোর্টে বিচারাধীন। সেই মামলায় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ১৫ জন মেয়ের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের তারিখ ধার্য ছিল। পাবনায় মেয়েদের সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়টি সকল ছাত্র ছাত্রীরা জানার পরে তারাও তাদের সহপাঠীদের সাথে পাবনা কোর্টে যেতে চায়।

প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ছাত্র ছাত্রীরা নিজেরাই দুই’শ টাকা করে চাঁদা তুলে এদিন তারা পাবনা রানা ইকোপার্কে পিকনিক করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারাই বাস ভাড়া করেছে, তারাই সব আয়োজন করেছে। আমি শুধু পিকনিক স্পটে যাওয়ার আগে কোর্টে কয়েকজন মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়ে আদালতে সেই মামলার সাক্ষ্য প্রদান করার ব্যবস্থা করিয়েছি। বিষয়টি আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে আগেই অবগতি করেছিলাম।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী জানান, উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে আগেই বলেছিলেন পাবনা কোর্টে একটা সাক্ষ্য প্রদান আছে শিক্ষার্থীদের। তবে পিকনিকের বিষয়টি তিনি আমাকে কিছু বলেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির সভাপতি রেদুয়ানুল হালিম বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। পিকনিকের কথা বলে শিক্ষার্থীদের কোর্টে নিয়ে যাওয়ার কাজটি মোটেই ঠিক হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর