রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ অপরাহ্ন

ই-পেপার

ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও আমল – মুফতি মাওলানা: শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শনিবার, ১৫ জুন, ২০২৪, ৪:০৯ অপরাহ্ণ

হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘মহানবী (সা.) প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা মুর্কারামা হতে হিজরত করে মদীনা মুনাওয়ারায় এসে দেখলেন, মদীনাবাসীরা মিহিরজান ও নওরোজ নামে দুটি দিবসে ক্রিয়া ও উৎসব পালন করে। তবে এ উৎসবকে কেন্দ্র করে যে ধরনের ক্রিয়া ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো তা মোটেই শরীয়তসম্মত ছিল না।
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ দিন তোমাদের আনন্দ উদযাপনের কারণ কী? তারা বললো, জাহেলী যুগ থেকেই আমরা প্রতিবছর দুটি দিবসে উৎসব পালন করে আসছি। অতঃপর প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য এর পরিবর্তে অন্য দুটি বিশেষ উৎসব নির্ধারণ করেছেন; একটি হল ঈদুল ফিতর, অন্যটি ঈদুল আজহা।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৬)
ঈদ অর্থ: আনন্দ, উৎসব, পুনরাগমন, পুনরাবৃত্তি, বার বার ফিরে আসা ইত্যাদি। আর আজহা অর্থ: ত্যাগ, বিসর্জন, রক্ত প্রবাহিত করা, ইত্যাদি। ১০ই জিলহজ মহান স্রষ্টার নৈকট্য ও সান্নিধ্য অর্জনের লক্ষ্যে পশু জবাই এর মাধ্যমে উৎসব পালন করাকে ঈদুর আজহা বা কোরবানির ইদ বলা হয়। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের আনন্দ-উৎসব উদযাপনের নির্দিষ্ট দিবস রয়েছে; মহান আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদের আনন্দ উদযাপনের জন্য দু’টি দিবস দান করেছেন। এ দিবসে বিশ্ব মুসলিম সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শামিল হয় আনন্দের বিশেষ মোহনায়। ঈদের আগমনে আনন্দিত হয় না, এমন মুসলমান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই এ কথা সর্বোজনবিধিত যে, ঈদ বিশ্ব মুসলমানের সার্বজনিন উৎসব।
প্রিয় পাঠক! পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের এক বিশেষ নেয়ামত। এই দিনে মুমিনের হৃদয়ে আনন্দের জোয়ার আসে এবং প্রত্যেক খোদাপ্রেমিক বান্দা পশু কোরবানির মাধ্যমে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য অর্জনের প্রয়াসে ব্যাকুল থাকে। সঙ্গত কারণেই মুসলিম উম্মাহর জীবনে ঈদুল আজহার গুরুত্ব অপরিসিম। মূলত: আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করাটাই হল ঈদুল আজহার মূল আনন্দ। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ঈদুল আজহার দিন সর্বাধিক প্রিয় ও পছন্দনীয় আমল হল কোরবানি করা। কিয়ামতের ময়দানে জবাইকৃত পশু তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ সম্পূর্ণ সুস্থ-সবল অবস্থায় হাজির হবে। নিশ্চয় কোরবানির পশুর রক্ত জমিনে পড়ার আগেই  মহান আল্লাহ তা’আলার দরবারে তা কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা কোরবানির মাধ্যমে নিজেদের পবিত্রতা অর্জন কর এবং খুশি মনে আনন্দ চিত্তে কোরবানি কর।’ (তিরমিযি শরিফ: ১৪৯৩)
ঈদুল আজহার এই পবিত্র দিনে প্রিয়নবী (সা.) ও তাঁর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম বিশেষ কিছু আমল করতেন; যা মুসলিম উম্মাহর নিকট সুন্নত হিসাবে পরিচিত। ঈদুল আজহায় পালনীয় সেসব সুন্নত আমলসমূহ এখানে তুলে ধরা হলো-
*প্রত্যুষে শয্যা ত্যাগ করা।
* মিসওয়াক করা।
* গোছল করা।
* যথাসাধ্য উত্তম পোশাক পরিধান করা।
* শরীয়ত সম্মতভাবে সাজ-সজ্জা করা।
* সুগন্ধি ব্যবহার করা।
* ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু না খাওয়া।
* সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া।
* যথাসম্ভব পদব্রজে ঈদগাহে যাওয়া।
* সম্ভব হলে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা।
* ঈদগাহে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে এই তাকবির বলা- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর