মো. স্বপন হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
মাদরাসার হুজুরের বেতন কত? ভেবেছেন কখনো? ভাববার কি সময় নেই? ভাবা কি প্রয়োজন নয়? মাসে ৫,০০০ টাকা অথবা ৭,০০০ টাকা মাত্র। পনের বছর পরও হুজুরের বেতন বাড়ে না, দীর্ঘ ১৫ বছরে হুজুরের বেতন ১,৫০০ টাকা থেকে এখন ৫,০০০/৭,০০০ টাকা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কখনো লিখতাম না । কারণ হুজুরকে যখনি এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, তখনি তিনি বলেন, এর প্রতিদান আখেরাতে আল্লাহ দিবেন। দুনিয়াতে যা রিজিকে আছে তাতেই শুকরিয়া, আলহামদুলিল্লাহ। লিখতে বাধ্য হয়েছি। কিছুদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণির একটা বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে দেখে। তিনি বলেছেন, হুজুরদের যা বেতন, তাতে রাতে যে তাঁরা মুসল্লিদের ঘরে চুরি করতে যায় না সেটাই আশ্চর্যের বিষয়! হুজুররা বাজারের ফার্মেসির দোকানে একই দামে ঔষুধ কিনে খায়। হুজুর যে বাজার থেকে মাছ কিনেন আমরাও সেই বাজারেরই ক্রেতা।
মোবাইলে রিচার্জ করলে হুজুর বলে কেউ এক টাকা কম রাখেন না। জনপ্রতি পরিবার পঞ্চাশ বা একশত টাকা করে বেতন দেন বলে তারা হুজুরের পান থেকে চুন খসলেই তীর নিক্ষেপ করেন। মন খারাপ হয়, আবার কিভাবে যেনো সবার সাথে মিশে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্ম তাঁদের। চিন্তার বিষয়: আজ মাদরাসা-মসজিদ গুলোর টাইলস হয়, কোণায় কোণায় ফ্যান, এসি হয়, সবকিছুই নতুন হয়, কিন্তু শুধু পুরাতন মানুষটাই জরাজীর্ণ হয়ে থেকে যায়, আফসোস! কোন এক ফজর নামাযের সময় ঘুম থেকে উঠে দৌঁড়ে বাসা থেকে কর্মস্থলে পৌঁছাতে না পারলে সেদিন যেন হুজুরের খবর হয়ে যায়, শত মানুষের চোখ হুজুরের দিকে, আঙ্গুল উঠিয়ে তারাও হুজুরের উপরে ইয়া বড় মেজিস্ট্রেট সেজে বসে যান।
যেন একমাত্র হুজুর ছাড়া সবাই আলেম, মুফতি, মুহাদ্দিস। তবুও দিনশেষে সব অভিমান ভুলে আখেরাতে প্রতিদান আল্লাহ দিবেন মর্মে এভাবে ধর্মকর্মে জড়িত আছেন বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ হুজুররা। এগুলো সোজা কথা না। কঠিন চ্যালেঞ্জ! আপনি যদি 50,000 টাকা মাসে বেতন পান তবুও অনেক সময় দেখা যায় মাসের শেষে ধার-ঋণ করতে হয়। কিন্তু আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন, একজন ইমাম-মুয়াজ্জিন বা মাদরাসার কোন শিক্ষক তাদের কোন এনজিও থেকে লোন নেয়া নেই অথবা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে টাকা নেয়ার কোন নজির নেই। আমি মনে করি, আল্লাহ তা’আলার অশেষ রহমত ও বরকত তাঁদের উপর ঢেলে দিয়েছেন। তাই তাদের সামান্য টাকায় অনেক বরকত দিয়েছেন। দোয়া করি পরকালেও যেন আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে উঁচু মার্যাদা দান করেন, আমীন।