খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার ফেনীরকুল সীমান্ত এলাকা থেকে ১৫টি ভারতীয় গরু উদ্ধার করেছে রামগড় ৪৩ (বিজিবি)।৪৩বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সোমবার (৩০ মে) রাতে খাগড়াছড়ির রামগড় স্থল বন্দরের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু সংলগ্ন ফেনী নদীর কুল এলাকা হতে এসব গরু জব্দ করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানায়,কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে একটি চক্র অবৈধভাবে ভারত থেকে সীমান্তপাড়ি দিয়ে গরু নিয়ে আসছে এমন তথ্য পায় বিজিবি।রামগড় ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান এর নির্দেশে রামগড় স্থল বন্দরের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু সংলগ্ন মহামুনি বিওপিতে কর্মরত নায়েব সুবেদার মোঃ মতিউর রহমান এর নেতৃত্বে ফেনী নদীর কুল নামক স্থানে অভিযান চালায় বিজিবি সদস্যরা।এসময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে অন্ধকারে পালিয়ে যায় পাচারকারী দল।পরে সেখানে তল্লাশী চালিয়ে ১৫টি ভারতীয় গরু জব্দ করে বিজিবি। বিজিবি আরো জানায় জব্দকৃত ১৫টি ভারতীয় গরুর আনুমানিক বাজার মূল্য ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রয়োজনীয় কাজ শেষে বর্তমানে গরুগুলো সীতাকুন্ড কাষ্টমস কার্যালয়ে জমা দেয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি জোন অধীনস্ত অঞ্চলে মাদক, গরু পাচার ও কাঠ পাচারসহ নানা ধরণের অপরাধ নির্মূলে ভবিষ্যতেও বিজিবির এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।মাদক,চোরাচালান প্রতিরোধে তিনি সকলের সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, রামগড় উপজেলার বল্টুরাম,কাশিবাড়ী ও ফেনীর কুল সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার শেষাংসসহ বিভিন্ন স্থানের ফাঁক ফোকর ব্যবহার করে চোরাকারবারিরা বিএসএফ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে আনছে গরু,শাড়ি,বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ ও মাদকদ্রব্য। স্থানীয় বাজার এবং চট্টগ্রামের বিভিন্নস্থানে বেচাকেনাও হচ্ছে ভারতীয় গরু, শাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ । মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। এসব চোরাকারবারীর আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যেও রয়েছে অন্ত:দ্বন্দ্ব। এর মধ্যে শাড়ি এবং গরু চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র। স্থানীয়রা কেউ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না বলে জানান অনেকে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী তার এলাকা বল্টুরাম হওয়ায় ছুটিতে বাড়িতে এসে মাদক নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করার চেষ্টা করায় এলাকার চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ী তাকে বেদম প্রহার এবং লাঞ্চিত করে।
স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসী জানান, চোরাকারবারীরা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠিয়ে এদেশে আনছে মাদকদ্রব্য শাড়ি,গরু এবং গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। তবুও থেমে নেই ভারত থেকে চোরাইপথে অবৈধ ব্যবসা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় অবাধে মাদকদ্রব্য এবং গরু চোলাচালানের এই রমরমা ব্যবসা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এলাকার সাধারন মানুষজন এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে।