নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ওপর সমাপনী বক্তব্য দিতে গিয়ে গতকাল সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আগামী অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে দেশের সব মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আমি আশাবাদী।’ সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিকালে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিশাল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরে আগামী অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে দেশের সব মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আমি আশাবাদী।’ তিনি বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে আমরা বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম, আমাদের প্রকৃত অর্জন প্রতিবছরই তার চেয়ে বেশি ছিল। বিগত ১০ বছরে জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮৮ শতাংশ, যা বিশ্বে সবার ওপরে। আমাদের কাছাকাছি ছিল চীন ১৭৭ শতাংশ আর ভারত ১১৭ শতাংশ। গত ১১ বছরে আমাদের জিডিপির আকার বেড়েছে তিন গুণ।
দি ইকোনমিস্ট ২ মে ২০২০ তারিখে গবেষণামূলক একটি প্রতিবেদনে ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশ রয়েছে নবম শক্তিশালী অবস্থানে।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১১ জুন এই মহান জাতীয় সংসদে আমরা বাজেট ২০২০-২১ উপস্থাপন করেছি। এর মাত্র সাত দিনের মাথায় গত ১৮ জুন ২০২০ তারিখে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আগামী অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করেছে ৭.৫ শতাংশ, যা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশের একেবারে কাছাকাছি। এতেই প্রতীয়মান হয়, আমরা বাজেটটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’ তিনি বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারির কারণে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ কৃষক, শ্রমিক, মজুর, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, বেদে, স্বাস্থ্যকর্মী, ভ্যানচালক, রিকশাওয়ালাসহ সব পেশার মানুষ, পান দোকানি, চা দোকানি, মুদি দোকানি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র, কুটির ও ছোট-বড় সব ব্যবসায়ী, সব শ্রেণি ও নৃগোষ্ঠীর মানুষ, যাঁরা কষ্টে আছেন তাঁদের সবার জন্য এবারের বাজেট।
দেশের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে এ বাজেট থেকে বাদ দিতে পারিনি। কাউকে বাদ দিতে পারলে বাজেটের আকার অবশ্যই ছোট রাখা যেত। ছোট রাখা যেত বাজেট ঘাটতিও। কিন্তু সত্য যে বড় কঠিন, তাই সব জেনেশুনে আমরা এই কঠিনকেই ভালোবেসেছি। এই বাজেট বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে আমাদের দেশের সব মানুষ, যারা আমাদের প্রাণশক্তি।’ সারা বিশ্ব একটি ক্রান্তিকাল পার করছে মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সেখান থেকে আমরাও পরিত্রাণ পাইনি। পৃথিবীর অর্থনৈতিক এলাকায় সময়টি একটি অস্বাভাবিক সময়। স্বাভাবিক সময় হলে মাননীয় সংসদ সদস্যদের প্রস্তাবগুলোর অনেক কিছু বিবেচনা করতে পারতাম।’