বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার অবসান

নিজস্ব  প্রতিবেদকঃ
আপডেট সময়: সোমবার, ৭ জুন, ২০২১, ৫:০৩ অপরাহ্ণ

কোভিড মোকাবিলায় আমরা সফল। আমাদের মৃত্যুর হার কম হওয়ায় তারা প্রথমে আমাদের টিকা দিতে চায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ধাপে যে ৬২ লাখ মানুষকে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা দ্বিতীয় ডোজ পাননি, তাদের অপেক্ষা দূর হতে পারে।
রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশ করোনার গণটিকা শুরু করে অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকা দিয়ে। ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনতে চুক্তি হয়েছিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে।
তবে ৭০ লাখ পাঠানোর পর সিরাম আর টিকা দিতে পারেনি। এর বাইরে ভারত উপহার হিসেবে দিয়েছিল আরও ৩৩ লাখ।
কিন্তু মার্চের পর থেকে আর টিকা না আসায় বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। আর এ অবস্থায় চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা আনার চেষ্টা চলছে।
তবে অক্সফোর্ডের টিকা বাংলাদেশের আরও অন্তত ১৪ লাখ লাগবে। কারণ, প্রথম ধাপে যাদের সিরামের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে এই পরিমাণ মানুষকে দেয়া যায়নি দ্বিতীয় ডোজ।
এ অবস্থায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে দেখা করে টিকা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সেদিন তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ মিলিয়ন ডোজ টিকা অতিরিক্ত রয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন টিকা চেয়েছি।’
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দূত সেদিন এ বিষয়ে কোনো কিছু জানাননি।
তবে শনিবার বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম পাচ্ছে বলে জানায়। এর মধ্যে টিকা আছে কি না, সেটি জানানো হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলায় আমরা সফল। আমাদের মৃত্যুর হার কম হওয়ায় তারা প্রথমে আমাদের টিকা দিতে চায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে।’
কী পরিমাণ টিকা যুক্তরাষ্ট্র দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা এখনও ঠিক হয়নি। আমরা তো অন্যদের মতো না। ১০-২০ হাজার বা এক লাখ ডোজে আমাদের হবে না। আমাদের ১৬৫ মিলিয়ন জনসংখ্যা। ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিলেও সে সংখ্যা হবে ১৩০-১৩৫ মিলিয়ন। এটা অনেক বড় বাজার।’
তাহলে টিকা কবে আসছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য জরুরি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসামগ্রী পাঠাচ্ছে। আশা করি, এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের টিকা আসবে।’
শুক্রবার বাংলাদেশের জন্য জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। একই সঙ্গে কিছু ছবিও প্রকাশ করে তারা।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স লয়েড অস্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের বিষয়টিকে আমি অতি মূল্যবান বলে মনে করি এবং আমার বিশ্বাস, এই সহায়তা আমাদের মজবুত ও ক্রমবিকাশমান বন্ধনের দৃষ্টান্ত।’
বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনী ও ট্রাভিস বিমানবাহিনী ঘাঁটিকে তাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা দ্রুত আসবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভিস বিমানঘাঁটি থেকে জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী নিয়ে বিমান রওনা হয় বাংলাদেশের দিকে
‘চীনের সঙ্গে কোনও জটিলতা তৈরি হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি হবে। তবে কখন হবে না হবে, সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। আমরা লাইন করিয়ে দিয়েছি, বাকিটা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাজ। ক্রয় এবং যৌথ উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
চীনের কাছ থেকে টিকা কেনার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। আমরা বলেছি টিকা কিনতে চাই এবং তোমরা কোনও বাধা ছাড়াই জোগান দাও। চীন আমাদের বলেছে তারা কোনও বাধা ছাড়াই টিকা সরবরাহ করবে।’
‘চীনের সঙ্গে উৎপাদনের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাদের দেশ থেকে সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য দল আসবে। তারা এসে সরেজমিন দেখে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।’ 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর