যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভায় মশক নিধন কর্মসূচি ও ব্লিচিং পাউডার ক্রয়ে অর্ধকোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু আতঙ্কে পৌরবাসী যখন দিশেহারা, তখন বিপুল অর্থ ব্যায়ে কেনা ওষুধের কোনো কার্যকর ব্যবহার হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩–২৪ অর্থ বছরে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন দফায় মোট ৪৫ লাখ ১৬ হাজার ১৫২ টাকার ওষুধ ও ব্লিচিং পাউডার ক্রয় দেখানো হয়েছে। মেসার্স রাজু জুট ট্রেডিং, রেলগেট দৌলতপুর, খুলনা থেকে দুই দফায় ৩৯ লাখ ৪৩ হাজার ৩০২ টাকা
মেসার্স মুন্সী ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, রাজঘাট, অভয়নগর থেকে এক দফায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৫০ টাকা পরের অর্থবছর ২০২৪–২৫ সালে ঢাকার এগ্রিম্যাক্স বাংলাদেশ লিঃ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে মশার লার্ভিসাইড কিট ক্রয় দেখানো হয়েছে আরও ৩ লাখ ৮ হাজার টাকার। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে—এতো বিপুল অর্থে কেনা মশক নিধন ঔষধ ও ব্লিচিং পাউডার গেল কোথায়? এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লার মানুষ জানিয়েছেন, তারা কখনো মশা নিধন বা ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে দেখেননি। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “ডেঙ্গুতে অনেকে আক্রান্ত হলেও আমাদের এলাকায় তদারকি বা মশক নিধন করতে আসেনি পৌরসভার লোকজন।” পৌরসভার একটি সূত্র জানায়, পৌরসভার মোট ১০টি ফগার মেশিন থাকলেও ৮টি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। বাকি দুইটিও সঠিকভাবে কাজ করছে না। অকটেন ব্যবহার করে মেশিন চালানোর কারণে এগুলো প্রায়ই নষ্ট হয়ে গেছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন—যখন মেশিনই অকেজো, তখন কিভাবে কোটি টাকার ঔষধ ব্যবহার হলো? তাদের দাবি, জনগণের টাকা লোপাট করা হয়েছে, এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম অবাক হয়ে বলেন, “এটা কি করে সম্ভব! আমার এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই, প্রশাসক স্যারের বক্তব্য নিলেই ভালো হয়।” পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী অসীম কুমার সোম বলেন, “মেয়র মহোদয় যা বলতেন আমরা তাই করতাম।” তবে এ নিয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে পৌর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফারুকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।