সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তফুরা খাতুনের বিরুদ্ধে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নাম নিজের বিদ্যালয়ে ভর্তি দেখিয়ে তাদেরকে অবৈধভাবে সরকারি উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরোজমিনে দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক শিক্ষার্থীর নাম হাজিরা খাতায় থাকলেও তারা সেখানে কখনোই ক্লাস করে না, শুধুমাত্র তাদের নামে উপবৃত্তির টাকা উঠানো হয়।
বিস্তারিত জানতে কয়েকজন শিক্ষার্থীর নাম এই বিদ্যালয় থেকে নিয়ে যাচাইয়ের জন্য শহরের নবারুণ মোড়ে অবস্থিত একরা একাডেমিতে গিয়ে জানা যায়,জালসান রহমান তিশাকে দক্ষিণ সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী দেখানো হয়েছে, কিন্তু সে ইকরা একাডেমীর নিয়মিত শিক্ষার্থী। তবে সে দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উপবৃত্তির টাকা পেয়ে থাকেন। একই অবস্থা আব্দুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও, তাকে দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা দেয়া হয় কিন্তু সে একরা একাডেমির নিয়মিত ছাত্র।এদিকে খাদিজা খাতুন,আশিকুর রহমান,আবরার ওয়াসীফ, সাদিকুল, রুম্মান,ফিরদাউস রহমান,শাম্মি আক্তার তানহা,মীম,সুয়াজ,সাইয়ারা হক, শ্রেয়শী, ইব্রাহিম, সাবিহা, সামিউল, নাজিফা তানজিহা সহ অনেক শিক্ষার্থীকে দক্ষিণ সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করা হলেও তারা শহরের ইকরা একাডেমি,রসুলপুর মাদ্রাসা,কিন্ডারগার্ডেন,
নবজীবন,পি,এন-বিয়াম, মাঁদার তেরেসা কিন্টারগার্ডেন,টাউন সুলতানপুর সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থী বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বললে তারা জানান,অত্র বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা তফুরা খাতুন ও সহকারী শিক্ষিকা নাহিদ সুলতানা পরস্পর যোগসাজশে এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সহকারী শিক্ষিকা নাহিদ সুলতানা শিক্ষার্থীদের সাথে চিল্লাচিল্লি করে কথা বলে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এমন কি দপ্তরির সাথে ও প্রতিনিয়ত ঝগড়াঝাঁটি করে থাকে বলে তারা জানান।
বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষিকা তফুরা খাতুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি অকপটে শিকার করে বলেন, আমার বিদ্যালয়টি তে ছাত্র-ছাত্রী কম থাকায় আমি এগুলো করেছি,যদি ভুল হয়ে থাকে আমি আর করব না।
সরকারি অর্থ তসরূপের বিষয়ে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দুর্নীতিবাজ প্রবীর মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
মানবিক কারণে হয়তো প্রধান শিক্ষিকা এদিক সেদিক করছে। প্রবীর মন্ডল আরো বলেন দক্ষিণ সুলতানপুর প্রাইমারি স্কুল তার ক্লাসটারের ভিতরে স্কুলটিতে হাতেগোনা ৪০ থেকে ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী আছে তার মধ্যে ১ম শ্রেণীতে ১২ জন,২য় শ্রেণীতে ৯ জন, ৩য় শ্রণীতে ১১ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ৬ জন, ৫ ম শ্রেণীতে ৬জন থাকলেও কিছু শিক্ষার্থী অনিয়মিত আছে। তবে আমরা বিষয়টি যাচাই করে দেখব। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যাবে না, দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে সচেতন এলাকাবাসী অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা তফুরা খাতুন ও সহকারী শিক্ষিকা নাহিদ সুলতানার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।