যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর সীমান্তবর্তী অঞ্চল আজ পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে। এই জনপদে প্রতিনিয়তই ঘটছে হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের মত নারকীয় অপরাধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিশেহারা, এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সরেজমিনে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সুন্দলী ইউনিয়নের ডহুর মশিহাটি গ্রাম এবং কুলটিয়া ইউনিয়নের সুজাতপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ভয়ানক বাস্তবতা। এসব এলাকায় দিনের আলোয়ও সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। যেন আইনের চোখ রাঙানি তাদের কাছে তুচ্ছ! এই চরম সহিংসতার ধারাবাহিকতায় ২২ মে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে এই চক্র। ঘের নিয়ে দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে। অথচ খুনিরা এখনো সেই অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে বিচরণ করছে। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, নিহত তরিকুল হত্যায় জড়িতদের অধিকাংশই আগে আওয়ামী লীগ নেতা ওলিয়ার রহমান হত্যা মামলার আসামি ছিল। ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীই এবার কৃষক নেতা তরিকুল ইসলামকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে আতঙ্কের নতুন অধ্যায় শুরু করেছে। একে ভয়ানক করে তোলে আরেকটি ঘটনা—হত্যাকাণ্ড আড়াল করতে ওই চক্রের আশ্রয়দাতারা নিজেরাই ঘরে আগুন দিয়ে সংখ্যালঘুদের নামে মিথ্যা হামলার নাটক সাজিয়েছে! তারা এখন অপপ্রচারের জন্য কিছু গণমাধ্যম ও অসাধু ব্যক্তিকে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তরিকুল হত্যা মামলায় একাধিক চিহ্নিত খুনি ধরতে অভিযান চলছে। কয়েকটি টিম একযোগে মাঠে কাজ করছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল এই নারকীয় ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছে।
এদিকে সচেতন মহল ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। একইসাথে হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সীমান্তবর্তী জনপদের এই অন্ধকার অধ্যায় আর কতদিন চলবে? মানুষ প্রশ্ন করছে—এই ভয়াবহ সন্ত্রাস ও প্রভাবশালী চক্রের দৌরাত্ম্য থামাবে কে?