শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :

আমার বাড়ি আমার ঘরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কনেস্টবল মশিউরের বিরুদ্ধে ভূমিদখল ও প্রতারণার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আপডেট সময়: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৮:২৭ অপরাহ্ণ

আমার বাড়ি আমার ঘর লি. এর মাধ্যমে ১৪৯ জনের ব্যক্তি একত্রিত হয়ে ৩৮ কাটা জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয় করা হলেও আমার বাড়ি আমার ঘরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কনস্টেবল মশিউর রহমান ১৪৯ জনের শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা জালিয়াতি ও প্রতারণার করে আসছেন।

ভুক্তভোগী শেয়ার হোল্ডাররা অভিযোগ করে বলেন, ২০ ফুট রাস্তা দেখিয়ে জমি বিক্রি করলেও প্রজেক্ট এর পরিবেশের জন্য কোন ধরনের রাস্তা নেই। রাস্তা বৃদ্ধি ও ল্যান্ড ইউসেজ ক্লিয়ারেন্সের কথা বলে ৭৬ লক্ষ টাকা নিয়ে কোন কাজ করেনি। আরও জাল দলিল সৃষ্টি করে অতিরিক্ত ২১ জনকে শেয়ার বিক্রি করে আমাদের (১৪৯ জন) উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এই ভাবে নানা প্রতারনা ও টাল বাহানার মাধ্যমে ২-৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও ফ্ল্যাট তো দূরের বিষয় আমাদের জমিও বুঝিয়ে দিতে পারেনি।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আমার বাড়ি আমার ঘর লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পুলিশ কনেস্টবল মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ভূমিদখল, প্রতারণা ও বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা ১৪৯ জন গত ১০ অক্টোবর ২০২২ সালে ১৩৯৮০, ৪৯৭০, ৬৪৮১ ও ৮৯৪৫ এ চারটি দলিলের মাধ্যমে হাতিরঝিল সংলগ্ন, পশ্চিম মেরুল বাড্ডায় “আমার বাড়ি আমার ঘর” ডেভেলপারস নিঃ কোম্পানীর মালিক কনস্টেবল মো. মশিউর রহমান মধ্যস্বতায় সর্বমোট ৩৮ কাঠা জমি ক্রয় করি। অনেক আশা নিয়ে জীবনের সঞ্চিত টাকার মাধ্যমে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই এর ব্যবস্থার জন্য আমরা ১৪৯ জন একত্রিত হই। কিন্তু মশিউর রহমান তার স্বার্থসিদ্ধির জন্য মিথ্যা জালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে সকল শেয়ার হোল্ডারদের দীর্ঘদিন যাবত হয়বানি করে আসছে। আমরা জমির শেয়ার ক্রয়ের সময় মশিউর জমি রেজিষ্ট্রী দেয়ার ৬ মাসের মধ্যে আমাদের ১৪৯ জনের মতের ভিত্তিতে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্য থেকে কমিটি করে কমিটির মাধ্যমে রাজউক থেকে প্লান পাশ ও বিল্ডিং এর কনস্ট্রাকশন শুরু এবং তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেবে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। প্লট গুলোর জন্য ২০ ফুট রাস্তা দেখিয়ে বিক্রি করেছে। প্রজেক্টের প্রবেশের জন্য ৩০ ফুট রাস্তা দেখিয়ে শেয়ার বিক্রী করেছে। বাস্তবে আমাদের প্রজেক্ট থেকে বের হওয়ার কোন রাস্তা নেই।

ভুক্তভোগের আরো বলেন, রাস্তা বৃদ্ধি ও ল্যান্ড ইউসেজ ক্লিয়ারেন্স এর কথা বলে ৭৬ লক্ষ টাকা নিয়ে কোন কাজ করেনি। উপরক্ত জাল দলিল সৃষ্টি করে অতিরিক্ত ২১ জনকে শেয়ার বিক্রি করে আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এই ভাবে নানা প্রতারনা ও টাল বাহানার মাধ্যমে ২-৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও ফ্ল্যাট তো দূরের বিষয় আমাদের জমিগুলো নিষ্কণ্টকভাবে বুঝিয়ে দিতে পারেনি। বর্তমানে “আমার বাড়ি আমার ঘর” অফিসে জমি বুঝিয়ে দেয়া, জমির রাস্তা বুঝিয়ে দেয়া ও চেকের মাধ্যমে দেয়া পাওনা ৭৬ লক্ষ টাকা চাইতে গেলে ভাড়া করা মস্তান ও তথাকথিত কিছু সমন্নয়ক দিয়ে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ভীতি প্রদর্শন ও জীবন নাশের হুমকি প্রদান করছে। এছাড়া খানা ও ডিবি পুলিশ দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করে বলেন, রাস্তা ব্যতীত প্লট বিক্রি করেছেন। শেয়ারহোল্ডাররা ৭৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও কোন কাজ না করা, আবার টাকা ফেরত চাইলে মাস্তান দিয়ে হুমকি দেওয়া। আবার চাপের মুখে ৭৬ লাখ টাকার ব্যাংকের চেক দিলেও তা ডিজওনার হয়। এছাড়াও ভুয়া পাওয়ার অফ এটর্নি ও চুক্তিপত্র দিয়ে নিজেকে মালিকানা বলা, জাল দলিল তৈরি করা, শেয়ারহোল্ডারদেরকে কাজের লোভ দেখিয়ে প্রতিপক্ষ বানানো, বহিরাগত মাস্তান পোষা ও শেয়ার হোল্ডারদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, শেয়ার হোল্ডারদের জীবন নাশের চেষ্টা করা, ডিবি পুলিশদেরকে দিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের হুমকি দেওয়া, ভাড়াটে গুন্ডাদের ব্যবহার করে ভুয়া শেয়ার হোল্ডারদের জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া, ভুয়া ৩৩ লাখ টাকার বিল শেয়ারহোল্ডারদের চাপিয়ে দেওয়া, সম্পত্তির হিসাব ও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়াসহ ইত্যাদি নানান ধরনের প্রতারণা করে আসছেন আমার বাড়ি আমার ঘরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পুলিশ কনস্টেবল মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে।

১৪৯ জন শেয়ার হোল্ডারকে প্রকৃতপক্ষে মশিউর মধ্যস্থতা করে রাস্তা বিহীন ল্যান্ড লকড একটি জায়গা বিক্রি করেছে।এই জায়গার মালিক ১৪৯ জন শেয়ারহোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে মশিউর রহমান নিরীহ শেয়ারহোল্ডারদের বিরুদ্ধে উল্টা তিনটা মামলা করেছে। এছাড়া মসিউরের অফিসের কর্মচারী মোস্তাক আহমেদকে দিয়ে সরকারি হাসপাতাল কে ঘুশ দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে এবং বাড্ডা থানা ম্যানেজ করে মিথ্যা ফৌজদারী মামলার হুমকি দিচ্ছে। ভুয়া ও জাল দলিল দিয়ে বিক্রি করা ২১ জনকে পার্শ্ববর্তী সরকারি জমি এবং পার্শ্ববর্তী মধু ও মোয়াজ্জেম সাহেবদের জমি জোর করে দখল করে নেয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া জাল দলিলে দেয়া ২১ জনকে জমি বুঝিয়ে দিতে না পেরে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে চাপিয়ে দেয়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সর্বশেষ মসিউর চেষ্টা করছে অসংখ্য ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করে, এলাকার মস্তানদের কে দিয়ে ভয় দেখিয়ে, এলাকার রাজনৈতিক লোকদের টাকা দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে, থানা ও ডিবি পুলিশ দিয়ে হুমকি দিয়ে পুনরায় আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের দখলকৃত জায়গা পুনর্দখল করতে। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে মোস্তফা সাহান, আলমগীর সরোয়ার ও মোয়াজ্জেম সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর