বান্দরবানের লামা উপজেলার আলোচিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির অফিসে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের একাধিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, ডাকাতির টাকা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল এবং আটককৃতদের দেওয়া তথ্যমতে মাটি খুঁড়েই এসব টাকা উদ্ধার করা হয়।
গত ৯ মে ভোর রাতে দেশীয় অস্ত্রধারী ১৫-২০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল লাইনঝিরি এলাকায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির তামাক ক্রয় অফিসে হামলা চালায়। তারা অফিসের কর্মচারীদের জিম্মি করে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নেয়। তবে শক্ত লোহার সিন্দুকে থাকা আরও ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ডাকাতরা নিতে পারেনি।
ডাকাতির ঘটনায় ১০ মে লামা থানায় মামলা দায়েরের পর তদন্তে নেমে পুলিশ বান্দরবানের লামা ও পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকা থেকে এ পর্যন্ত তিন নারীসহ আটজনকে আটক করেছে।ঘটনাটি লামা ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আটককৃতরা হলেন: কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভেউলা এলাকার মারুফুল ওরফে আরিফ (৩৩), একই উপজেলার লক্ষ্যাচর এলাকার নাঈমুল ইসলাম ওরফে সাগর (৩১), লামা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার আব্দুর রহিম (৩৬), লামা পৌরসভার মো. সুজন (২৫), লামার বিলছড়ি এলাকার আনোয়ারা বেগম (৪৫), এবং করিমের স্ত্রী ও বোনসহ আরও একজন পুরুষ (নামের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি)।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন জানান, ১৭ মে করিমের স্ত্রীকে আটক করা হলে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দুইটি স্থানে অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে ১৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর আগে আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার ২০০ টাকা এবং তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৬ মে রাত ৭টায় ওয়াসের আলীর পাহাড়ি জমি থেকে আরও ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, আটক মো. করিম দক্ষিণ চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং এই ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ওসি তোফাজ্জল হোসেন আরও জানান, “মামলার পর থেকেই তদন্ত চলমান রয়েছে। আমি এখনো দুর্গম এলাকায় অবস্থান করছি (নিউজ লেখার সময় শনিবার বিকেল ৪টা), তাই আটককৃত সকলের নাম এখন বলা সম্ভব নয়। তবে পুরুষ পাঁচজন ও নারী তিনজন—মোট আটজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার এবং লুট হওয়া সম্পূর্ণ অর্থ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”