পাবনার ঈশ্বরদীতে মসজিদ, মাদ্রাসা, ইদগাহ ও গোরস্থানের কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব। এবং মসজিদের ইমামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী দুলাল সরদারের বিরুদ্ধে। গত ৩০ আগস্ট শুক্রবার দিয়ারসাহাপুর ও চরসাহাপুর মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর থেকেই সাধারণ মুসল্লী ও এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব ঘটনায় প্রায় সাত দিন ধরে মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছর যাবৎ চরসাহাপুর এলাকার এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন অফিকুজ্জামান রতন মহলদার। ৩০ আগষ্ট শুক্রবার জুমার নামাজের আগে খুতবা দেওয়ার সময় আলমগীর হোসেন বাদশা নামের এক ব্যক্তি মসজিদে ঢুকে ইমামের কাছে থেকে মাইক কেড়ে নেয়। পরে দিয়ারসাহাপুর ও চরসাহাপুর কওমি মাদ্রাসা, মসজিদ,ইদগাহ ও গোরস্থানের বর্তমান কমিটি বাতিল করে বিএনপি নেতা দুলাল সরদারের নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। এসময় ইমাম, কয়েকজন মুসল্লি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজেদুল ইসলাম এটির প্রতিবাদ করলে তাঁদের মসজিদের মধ্যেই মারপিট করেন বাদশাসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারামারি শুরু হয়। এদিকে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আতঙ্কে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল মো. এনামুল হক মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন। ওই দিনের পর থেকে মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক অতিকুজ্জামান রতন মহলদার বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে ঈশ্বরদীর বাইরে অবস্থান করছি, শুনেছি কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, এর বেশি কিছু জানিনা। মাদরাসার মুহতামিম মো. এনামুল হক বলেন, ছোট ছোট শিশুরা এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসায় আসতে ভয় পাচ্ছে এ কারণে পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাদ্রাসা বন্ধ রাখতে রাধ্য হয়েছি। ইউপি সদস্য সাজেদুল ইসলাম বলেন, মসজিদের মধ্যে জুমার নামাজের খুতবা পাঠ করার সময় ইমামের কাছে থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে তাঁকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে শান্ত থাকতে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি করার প্রস্তাব করায় আমাকেও মসজিদের মধ্যে মারধর করা হয়েছে। এবিষয়ে আমিনুল সরদার জানান, এতদিন এসব প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতারা দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন রাজনৈতিক ও সামাজিক পটভূমি পরিবর্তন হাওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতারা সবাই আত্মগোপনে চলে যান এ কারণে আমরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির দুলালের নাম ঘোষণা করি। ইমাম বা ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা আমার জানা নেই। হুমায়ুন কবির দুলাল মারপিটের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, আমি নামাজরত অবস্থায় ছিলাম ছেলেপেলেরা বের হয়ে একটা ছেলের গায়ে হাত দেয় সেখানে একটা ছেলে আহতও হয়। আমি ভেতরে থাকাই কে মেরেছে আমি দেখিনি। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, লোকমুখে ঘটনাটি শুনেছি। এখনো কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।