টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬ জনকে টপকিয়ে প্রথমবারেই ভাইস চেয়ারম্যান পদে বাজিমাত করলেন নতুন মুখ সাংবাদিক শহিদ। নানা প্রতিকুলতা ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বাসাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এম শহীদুল ইসলাম। তিনি গত ৫ জুন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। তিনি ইতোপূর্বে বাসাইল প্রেসক্লাবের তিনবারের সাবেক সভাপতি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সৎ ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত এই সাংবাদিক নেতা প্রায় ২৫ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। স্বচ্ছ সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী এ নেতা বাসাইল প্রেসক্লাব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২৫ বছরের সাংবাদিকতায় মানুষের নানা অভিযোগ-প্রয়োজনে পুরো উপজেলা চষে বেড়িয়েছেন তিনি। ক্লিন ইমেজ ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এবং অসাধারণ মিশুক প্রকৃতির কারণেই জনতার হৃদয় জয় করে ‘সাংবাদিক নেতা’ থেকে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তিনি। এতে তার নির্বাচনি এলাকা বাসাইলসহ সমগ্র জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। জেলার বাইরেও দেশ-বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের কাছ থেকেও শুভেচ্ছা বার্তা দিচ্ছেন অনেকেই।
জীবনে নানা চড়াই-উৎরাই’ পার করে আজকের এ অবস্থানে এসেছেন তিনি। নিজের সংগ্রামী জীবনে নানা সময়ে গরীব-অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহযোগিতা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়াঙ্গনে নিজের উপস্থিতির পাশাপাশি নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন শহীদুল ইসলাম। যার প্রমাণ হিসেবে প্রথমবারের মত নির্বাচন করেই তিনি বাজিমাত করেছেন।
সারাদেশে করোনা পরিস্থিতে মানুষ যখন কর্মহীন ঠিক সেই মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসাইল উপজেলার বাসিন্দা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সাধারণ মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে কাজ করে চলছেন অবিরত। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও তিনি অনেক অবদান রেখেছেন। বিভিন্ন মসজিদ মাদরাসা ও এতিমখানার শিশুদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। উদীয়মান তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। তার মহত্বের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা শুধু সাধুবাদযোগ্যই নয়, অনুসরণযোগ্যও। এই মহত্বই বাসাইলবাসীর মন কেড়ে নিয়েছেন তিনি। একজন শিক্ষিত, কর্মদক্ষ, মানুষের বিপদের আপনজন, সৎ ও সততার উত্তম সমন্বয়, তারুণ্যদীপ্ত সাংবাদিক নেতা শহিদুল ইসলাম।
এদিকে, এই সাংবাদিক নেতাকে নির্বাচন চালাতে অন্যান্য সাংবাদিক সহকর্মী ও শুভাকাঙ্খিরা অর্থের জোগান দিয়েছেন। কেউ কেউ পোস্টার ও অর্থ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছেন। নির্বাচনের দিন অধিকাংশ কেন্দ্রে তার পক্ষে পোস্টার ও এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিছু কিছু কেন্দ্রে তার ও অন্যান্য সাংবাদিক শুভাকাঙ্খিদের এজেন্ট দেওয়া হয়েছিল। সবমিলিয়ে এই সাংবাদিক নেতা জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে। মাত্র কয়েকদিনের ঘোষণায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে নির্বাচনের মূল পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন বাসাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম বিজয়। এছাড়াও প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল লতিফ, সাহিত্য সম্পাদক সাইদুল ইসলাম দিপু, ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জিয়ারত জুয়েল, আইসড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আল আরিফ ইমরান, প্রার্থীর ছোট ভাই রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য সাংবাদিক সহকর্মীরা। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ফুলকী ইউনিয়নবাসী।
সোনালিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাসেল মিয়া নামের একজন ভোটার বলেন, ‘এবার আমরা একজন ভিন্ন পেশার ব্যক্তি সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম সাহেবকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছি। অন্যারা নির্বাচিত হয়ে ভোটারদের ভুলে গেছেন। আশা করছি তিনি ভোটারদের সম্মান বজায় রেখে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।’
এ ব্যাপারে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম বিজয় প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘নানা প্রতিকুলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তাকে বিজয়ী হতে হয়েছে। অতএব তার উচিৎ হবে আগামী পাঁচ বছর মানুষের পাশে লেগে থাকা।’
প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ‘আশা করি তিনি অতিতের মতো মানুষের মানুষের পাশেই থাকবেন। উপজেলার সুসম উন্নয়নে মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিকা রাখবেন।’
নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক এম শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ আমাকে ভালোবেসে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন। আমি তাদের এই ভালোবাসার মূল্যায়ন অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ। আমি পুরো উপজেলার সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক ও শুভাকাঙ্খিদের কাছে ঋণি হয়ে রইলাম। যেভাবে নির্বাচনের আগে পুরো উপজেলা চষে বেড়িয়েছি। ঠিক সেইভাবেই আমি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের পাশে থাকবো।’
নির্বাচনে সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৪৯ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শিপন টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১১ হাজার ৩১৯ ভোট। আর সাদিকুর রহমান খান শাহীন টিয়া পাখি প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৫৫ ভোট, বিজয়া আহমেদ চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৯১৫ ভোট, নুরুল ইসলাম খান রাজু উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৫৫৬ ভোট, আতিকুর রহমান আতিক বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৯৭ ভোট ও মোকছেদ খলিফা তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৪৫ ভোট।
প্রসঙ্গত, এম শহীদুল ইসলাম ফুলকী ইউনিয়নের তিরঞ্চ গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি বাসাইল প্রেসক্লাবের তিনবারের সাবেক সফল সভাপতি ও দৈনিক আজকের পত্রিকার বাসাইল প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।