মোঃ কামাল হোসেন অভয়নগর যশোর:
ইট পাথরের এই দুনিয়াই কেউ থাকে ১০ তালায় আর কেউ থাকে গাছ তলায় তবে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে বাঁশ বাগানে বসবাস করছে অসহায় মা ও তার মানসিক প্রতিবন্ধি সন্তান। খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ঘটনা স্থল উক্ত বাঁশবাগানে গেলে দেখা যায় এক অকল্পনীয় বাস্তব ঘটনা। বাড়ীতে যাবার কোন রাস্তা নেই, নেই আশেপাশে কোন বাড়ী, গভীর বাঁশবাগান নি:শব্দের দুপুর। বাঁশ বাগান-ই তার উঠান, সেখানে পড়ে আছে ভাঙ্গা জগ, ময়লা যুক্তহাড়ি পাতিল, ছেড়ামশারি, কম্বল ও ছেড়া পলিথীনের চাল যা শুকনো বাঁশ দিয়ে চাপা দেওয়া, রয়েছে কিছু জ¦ালানি, ঝুপড়ির পিছনে আছে ছাঁয়ের গাঁদা, আশেপাশে তাকিয়ে ও পাওয়া গেলোনা কোন টয়লেট, নেই খাবার পানির কোন ব্যবস্থা, ঘরের পার্শ্বে ছোট ছোট ঝোঁপ ঝাঁড়ের উপর বাগানের জোক লাফিয়ে চলছে, বড়ীতে যাবার কোন রাস্তানেই, ঘরের উত্তর পার্শ্বে আছে কবর স্থান, দক্ষিণে পানের ক্ষেত, পূর্ব আর পশ্চিমে বাঁশ আর বাঁশ যা দেখে মনে হবে কোন এক আদিম যুগের মানুষের বসবাস এই বাগানে।
ঘটনাটি ঘটেছে অভয়নগর উপজেলার ৬নং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের উত্তর পাড়া একটি বাগানে। খোজ নিয়ে জানা গেল নজরুল ইসলামের স্ত্রী সাকিরা বেগম আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে তালাক দিয়েছে স্বামী। প্রতিবন্ধি একমাত্র সন্তান রিগান (১৭) কে নিয়ে সেই থেকে অবস্থান করছে এইবাগানে কিছু বছর পার্শ্বের একটি কবর স্থানে থাকার পর এখন অবস্থান করছেন এই বাঁশ বাগানে রাতে শিয়ালের হাক জিঝিপোকার ঢাক নি:শব্দে দুপুর প্রচন্ড গরম হাড়কাপানো শীতে ও থাকে এই বাগানে খোজ নেয়নি আজও কেউ। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা খালিদ জানালেন পার্শ্বে আমার বাড়ী হলে ও তার জানা নেই কবে থেকে সাকিরা বসবাস করছেন এই বাগানে। খোজ নিয়ে আরো জানা গেলো এই অসহায় সাকিরা বেগমের স্বামী যাবৎ জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী এখন যশোর কারাগারে আছেন।
তিন সন্তানের এই জননীর সাথে কথা হলে তিনি জানালেন তার স্বামী নজরুল ইসলাম ধর্ষণ মামলায় যাবৎ জীবন জেল হয়েছে। মামলা চালানোর জন্য তার ভাষুর এর কাছে ২৯ হাজার টাকা প্রদান করেছিল তবে সে টাকা না খরচ করে মসজিদের ফান্ডে রেখে এসেছে টাকাটাও আর ফিরিয়ে দেয়নি তাই রাগে দুখে ক্ষোভে সমাজের কারো সাথে কোন সম্পর্ক না রেখে এই বাগানে তার প্রতিবন্ধি সন্তান কে নিয়ে পড়ে আছেন।