দুলাল হক, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঘনঘন বুষ্টিপাতের কারণে এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে লিচুর ফলনে বিপর্যয় নেমে এসেছে।একদিকে গাছ থেকে লিচু ঝড়ে পড়ায় এবং অসময়ে ফল পেকে যাওয়ায় লিচু চাষী ব্যাপাীরা পড়েছে লোকসানের মুখে।তবে কৃষি বিভাগের মতে,বাজারে দাম ভাল থাকায় এবং পরিবহন সমস্যা কেটে যাওয়ায় চাষীরা লাভবান হবেন।
মধুমাসের মিষ্টি ফল লিচু।এ সময় গাছে গাছে দোল খায় লাল টুকটুকে লিচু । গোলাপি, চায়না থ্রি,বেদানা, বোম্বাই , কাঠালি সহ বিভিন্ন বাহারি নামের এ জেলার লিচুর কদর দেশজুড়ে।এর প্রধান কারণ দেশের বিভিন্ন জেলার লিচুতে পোকা থাকলেও ঠাকুরগাঁও জেলার লিচু বরাবরই এর ব্যতিক্রম।কিন্তু এ বছর লিচু পাকার আগ মুহুর্তে ঘনঘন বৃষ্টিতে বাগানেব বেশিরভাগ লিচু গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে।তাছাড়া টানা বৃষ্টিপাতের কারণে হরমোন জাতীয় কীটনাশক স্প্রে করা সম্ভব হয়নি।এ অবস্থায় লিচুতে মাংসল আঁশ তৈরী হয়নি এবং আকারেও অনেক ছোট থেকে যায়।অনেক বাগানে অসময়ে লিচু পেকে যাওয়ায় ব্যয় বাড়ার ভয়ে চাষী ও ব্যাপারীরা লিচু সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছেন।এ অবস্থায় লিচু চাষীরা বাগানের ভাড়া,পরিচর্যা সহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় উঠানো সম্ভব হবে না বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে বাজারে প্রতি হাজার লিচু যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতে চাষী ও বাগান মালিকরা অনেক টাকা লোকসান গুনবেন।টাকার অংকে তা ১৫ কোটি টাকার উর্দ্ধে।
লিচু বাগান মালিক ও চাষিরা জানান, এ বছর শুরুর দিকে আবহাওয়া ভাল থাকলেও মেষের দিকে ঘনঘন বৃষ্টিতে অনেক লিচু গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে।বৃষ্টির কারণে ফলের আকার বড় হয়নি।মাংসলও তৈরী হয়নি।আকর্ষনীয় রঙ না হওয়ায় বাজারে তেমন চাহিদা নেই।তাতে লাভের আশায় বাগান ভাড়া নিয়ে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী লোকসান গুনবেন বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন।
চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ২ হাজার বাগানে লিচুর চাষ হয়েছে। আর লিচু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয় ১৭ হাজার ১শ মেঃ টন ।ফলন আশানুরুপ হলে লিচু বিক্রি করে এ জেলার চাষীরা প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় হতো।কিন্তু ফলন অর্ধেক কমে যাওয়ায় চাষীরা প্রায় ১৫ কোটি টাকা লোকসান গুনার আশঙকা রয়েছে ।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, পরিবহন সংকট কেটে যাওয়ায় এবং বাজারে দাম ভাল থাকায় চাষীরা পূর্বের বছরের ন্যায় লাভবান হবেন।