নিজস্ব প্রতিনিধি:
পাবনার মেয়ে নাহিদ সুলতানা যুথি। তিনি সুপ্রিম কোর্টের একজন স্বনামধন্য আইনজীবী। তার আরেকটি পরিচয় তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে রাজনীতি করে আসা অ্যাডভোকেট যুথি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুলা) প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ হিসেবেও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। রুলার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের অনুভূতি, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা রুলার সদস্যদের নিয়ে তার পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাইজিংবিডির সাথে কথা বলেছেন তিনি।
নাহিদ সুলতানা যুথি বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, রুলা হলো রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। যারা রাজশাহী ইউনিভার্সিটি থেকে ল পাশ করে আইন পেশাসহ বিভিন্ন পেশায় সারা দেশে কর্মরত আছেন, তারা এই সংগঠনের সদস্য। প্রথমে এটি একটি ছোট সংগঠন ছিল। ধীরে ধীরে অনেক বড় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এর বর্তমান সদস্য দুই হাজার আটশ। রুলার সদস্যদের মধ্যে এখন অনেকেই উচ্চ আদালতের বিচারপতি আছেন। অনেক সদস্য রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বিভিন্ন পেশায় আমাদের সদস্যরা কর্মরত আছেন।
রুলা কী উদ্দেশ্যে নিয়ে কাজ করছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রুলা একটি ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন। আমাদের উদ্দেশ্যেই হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন থেকে পাশ করে আসা সবাইকে একত্রিত করা এবং তাদের সামগ্রিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করা। আমরা মাঝে মাঝে একত্রিত হই। আমাদের মতামত প্রকাশ করি। আমাদের সদস্যদের মধ্যে যারা দুস্থ তাদেরকে আমরা ডোনেট করি।
রুলার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের কথা জানাতে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সেশনের জন্য আমি এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হয়েছি। গত মার্চ মাসে দায়িত্ব পেয়েছি। আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রুলার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছি। প্রথমে অনেকে বলতো রুলার প্রেসিডেন্ট হবে নারী! গর্ব করে বলতে পারি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। শুধু রুলা নয়, ডুলা, চুলা এ ধরনের যতগুলো বাংলাদেশে সংগঠন আছে তার মধ্যে আমিই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার অনুভূতি হওয়া খুবই ভালো। তবে অনুভূতি ওইটা না যে আমি প্রেসিডেন্ট হয়েছি, খুব ভালা লাগছে। আমি সদস্যদের কল্যাণে কাজ করার জনই মূলত প্রেসিডেন্ট হয়েছি। একটা মেয়ে হয়েও যেকোনো অংশেই আমরা পিছিয়ে নেই। আমরা যে সমাজে এত বড় সংগঠনের দায়িত্ব পালন করতে পারি, এটাই গর্বের বিষয়।
নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। আমরা পিকনিক করেছি। ইফতার পার্টি করেছি। সম্মেলন হবে। আমাদের ইন্টারনাল কিছু কাজ আছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে করবো। এই সংগঠনকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।
রুলা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, প্রেসিডেন্ট পদে না থাকলেও আমি সদস্যদের কল্যাণে কাজ করে যাব। ব্যক্তিগতভাবে রুলার কাছ থেকে কোন কিছু প্রত্যাশা করি না। আমি রুলাকে দিতে চাই। রুলার ফান্ড ক্রিয়েট করতে চাই। রুলাকে কেন্দ্র করে আরো বেশি সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করার পরিকল্পনা আছে।
‘জুনিয়র সদস্যরা যখন কোর্টে আসেন তখন তারা বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন। সেগুলা দূর করার চেষ্টা করবো। আমার যদি বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকে তাহলে আমি জুনিয়র সদস্যদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করবো। আমি স্বপ্ন দেখি, রুলার সদস্যদের জন্য ফান্ড হবে। একটা স্থায়ী জায়গা হবে। একটা ভবন থাকবে। যেখানে সারা দেশ থেকে সদস্যরা এসে থাকতে পারবেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে করে যেতে চাই।’