বন্যায় কবলিত মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া অশেষ নেকির কাজ। হাদিস শরিফে দুনিয়াতে ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষকে অন্ন ও বস্ত্র দানের পরকালীন প্রতিদান ঘোষণা করে রাসুল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে মানুষকে খাদ্য দান করেছে, কেয়ামতের দিন তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে কেয়ামতের দিন পানি পান করানো হবে। যে মানুষকে বস্ত্র দান করেছে, তাকে কেয়ামতের দিন বস্ত্র পরিধান করিয়ে তার লজ্জা নিবারণ করা হবে।’ (আবু দাউদ)।
বন্যায় অনেক পরিবারের বাড়িঘর, সহায়সম্পদ ও জীবনজীবিকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বসতভিটা, জমি-জিরাত ও ফল-ফসল নিশ্চিহ্ন ও বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত অঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষ কতটা দুঃখ-কষ্টের মধ্যে পড়েছে, তা সহজেই বোঝা যায়। বন্যাদুর্গত বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহিত নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের অভাবে তারা ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
তাই জরুরি ভিত্তিতে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় মানবেতর জীবনযাপনরত বানভাসি মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ তৎপরতা, শুকনা খাদ্যসামগ্রী দান, আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক। যেমনিভাবে রাসুল (সা.) দিকনির্দেশনা প্রদান করে বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, রুগ্ন ব্যক্তির সেবা করো এবং বন্দিকে মুক্ত করো অথবা ঋণের দায়ে আবদ্ধ ব্যক্তিকে ঋণমুক্ত করো।’ (বুখারি)
সম্প্রতি সারাদেশে বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি টিভি মিডিয়ার নিয়মিত টপ খবর। চারদিকে অথৈই জ্বলের মাঝে মানুষকে ভাসতে দেখলেও ত্রান বিতরণ ও বন্যার্তদের পাশ দাড়ানোর দৃশ্য খুবই অপ্রতুল। এখনো মানবতার আর্তনাদে কেঁদে উঠছে না বৃত্তশালীদের মন। সুখীরা মত্ত সুখ আমেজে। দু:খীরা ভাসে পানিতে। সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি উজানের প্রতিটি মানুষেরই মানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়া উচিত। আমাদের মতো বনাঞ্চলবাসীদের জীবনও হোক আলোকিত। আলো জ্বালিয়ে দিন মানবতার, প্রদীপ জ্বলোক সেবার।