ইউএনও’র গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা হয়নি
ঘটনা তদন্তে সরেজমিনে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার সংবাদে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গঠিত চার সদস্যর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বুধবার পর্যন্ত জমা হয়নি সংশ্লিষ্ঠ নির্বাহী অফিসারের কাছে। এদিকে ঘটনা তদন্তে নেমেছেন বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকার বিনিময়ে ১৪ হাজার ৬শ ৯৪ জন শিক্ষার্থীর টিকা দেয়ার সংবাদে ২০ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম ঘটনা তদন্তে চার সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় উপজেলা সহকারী কমিশনার নেহের নিগার তনু। অপর সদস্যরা হলেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম, সমাজসেবা অফিসার সুশান্ত বালা ও সমবায় অফিসার মো. কামরুজ্জামান।
এই কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে (মঙ্গলবার) তদন্ত পূর্বক মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের অনুরোধ করা হলেও বুধবার দুপুর পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে জমা দিতে পারেন নি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী কমিশনার নেহের নিগার তনু জানান, দু’এক দিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলামের অনিয়ম দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর ওই শিক্ষা অফিসারকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে শিক্ষকদের নেতৃত্ব প্রদানকারী একটি অংশ। যার ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি গঠনের পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুলীল কুমার বাড়ৈর সভাপতিত্বে শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষকদের একটি সভা। ওই বৈঠকে উপজেলা দূনীতি প্রতিরোধ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাসহ কমিটির একাধিক শিক্ষক সদস্যগনও উপস্থিত থাকার কথা জানা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিন যাবত কতিপয় শিক্ষক ওই দূর্নীতবাজ শিক্ষা অফিসারকে বাচাতে যা করনীয় সে বিষয়ে একাট্রা হয়েছেন তার আস্থাভাজন কতিপয় শিক্ষকেরা। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা টাকার একটি অংশ বিশেষ আদায় দেখিয়ে বিভিন্ন খরচের খাতও নিরুপন করে তা তদন্ত কমিটিসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে শিক্ষক নেতাদের প্রদান করার কথা ওই বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলামের অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার নিয়োগ বানিজ্য, কমিটি গঠন ও পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অর্থ আদায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদের জের ধরে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতিসহ নারী ঘটিত বিষয়ে নেতিবাচক তথ্য জানিয়েছেন সাবেক প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক শ্রী অরুন কৃষ্ণ হালদারসহ সংশ্লিষ্ঠ ভুক্তভোগী শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতিরাও।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তিনি ঘটনা তদন্ত শুরু করেছেন। মঙ্গলবার তিনি আগৈলঝাড়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বুধবার সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেছেন তিনি। তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

 

#চলনবিলের আলো / আপন