সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে চাল পেতেও দিতে হচ্ছে টাকা! পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি (Vulnerable Group Development) কার্ডধারী হতদরিদ্র নারীদের কাছ থেকে চাল বিতরণের নামে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য আরজু খান ও আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৯মে) উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান গ্রামে।
অভিযোগে জানা গেছে, সরকারি তালিকাভুক্ত অসহায়, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের মধ্যে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিনামূল্যে বিতরণের কথা। কিন্তু বাস্তবে চাল নিতে গিয়ে কার্ডধারীদের শুনতে হয়েছে, “৩০০ টাকা না দিলে চাল মিলবে না!” এমনকি স্থানীয় মসজিদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, টাকা ছাড়া চাল মিলবে না।
সাবিনা খাতুন ও জুলেখা খাতুনসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আমরা গরিব মানুষ। চাল দেওয়ার কথা বিনামূল্যে, কিন্তু টাকা ছাড়া মেম্বাররা চাল দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে দিয়েছি।
ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ঘটনাস্থলে এসে জন প্রতি ১০০ টাকা ফেরত দেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, বাকি অর্থ পরিবহন ও অন্যান্য খরচের কথা বলে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আরজু খান বলেন, কার্ডধারীরা স্বেচ্ছায় ২০০ টাকা করে দিয়েছিল। কিন্তু পরে তারা ভিডিও করে ইউএনও স্যারের কাছে দেয়।ইউএনও স্যার সচিবকে পাঠান, আমরা তখন ১০০ টাকা ফেরত দিই।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, সরকারি চালের বিনিময়ে অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি ত্রাণ নিয়েও যদি গরিবের পকেট কাটা হয়, তবে সাধারণ মানুষের ভরসার শেষ আশ্রয়টুকু কোথায় থাকবে—এ প্রশ্ন এখন গোটা ভাঙ্গুড়াবাসীর।
