হঠাত করে বিভাগের সর্বত্র জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। ফলে শীতের প্রভাব পরতে শুরু করেছে বয়স্ক ও শিশুদের ওপর। বিশেষ করে এই দুই শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন নিউমোনিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে।
বুধবার সকালে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে শয্যার তুলনায় হাসপাতালে চারগুণ শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে চলতি মাসে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণে ১০ শিশু মারা গেছে।
একাধিক চিকিৎসকেরা বলেছেন, শীত মৌসুম শুরুর পর থেকেই শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই), গলাব্যাথা থেকে শুরু করে ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই হাসপাতালে সবসময় রোগীর চাঁপ বেশি থাকে। এরমধ্যে শীতের শুরুতে অন্যান্য রোগীর তুলনায় শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। আমরা চেষ্টা করি সকল রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে। এই সময়টায় শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর-সর্দিসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেবাচিমের শিশু ওয়ার্ডে মোট বেডের সংখ্যা ৩৬টি। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের অধিকাংশের বয়স ২৯ দিন থেকে ৫ বছর। অপরদিকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণে চলতি মাসে ১৭ জন ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সরেজমিনে শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেছে, ওয়ার্ডটি রোগীতে পরিপূর্ণ। ঠান্ডাজনিতরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে বেশিরভাগ শিশুকে। রোগীর চাঁপে নার্স ও চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
হাসপাতালের শিশু বিভাগে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স জোসনা আক্তার বলেন, হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। প্রতিদিন কম বেশি ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।