রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

ই-পেপার

ঈশ্বরদী অরণকোলা  জমজমাট পশুর হাট, ক্রেতা কম 

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২, ২:৩৩ অপরাহ্ণ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক গরু উঠলেও ক্রেতা তেমন নেই পাবনার ঈশ্বরদী অরণকোলা পশুর হাটে।
বেশিরভাগ ক্রেতাই গরু দেখছেন, দরদাম করছেন কিন্তু কিনছেন কম। ক্রেতারা গরুর দাম বেশির অভিযোগ করলেও বিক্রেতারা তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন পশু খাদ্যের দাম দ্বিগুণ হলেও গরুর দাম সেভাবে বাড়েনি। বেচাকেনা কম হলেও হাটে লোক সমাগম রয়েছে চোখে পড়ার মতো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে হাট।
মঙ্গলবার (২৮শে জুন-২২) দুপুরে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম ঈশ্বরদী অরণকোলা পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে বিভিন্ন আকারের পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে ট্রাক, ভটভটি ও পাওয়ার ট্রলিতে শত শত গরু আসছে হাটে।
বিশাল হাটের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে শুধু গরু আর গরু। ক্রেতারা পছন্দের গরু দেখছেন ও দরদাম করছেন। গরুর পাইকাররা গরুর সাইজ অনুসারে দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ক্রেতাদের। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দরকষাকষি ও বেচাকেনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে হাটের পরিবেশ।
পটুয়াখালী উপজেলা সদর থেকে অরণকোলা হাটে গরু কিনতে আসা মির্জা আব্বাস আলী জানান, অরণকোলা হাটে পর্যাপ্ত গরু পাওয়া যায়। এখানকার খামারিরা বড় বড় গরু পালন করে। প্রতিবছরই কোরবানির গরু কিনতে আসি। আমি গরু ব্যবসায়ী।
এছাড়াও নিজেদের বাড়ির কোরবানির গরুও এ হাট থেকেই প্রতিবছর কিনে নিয়ে যাই। এবার গরুর দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি তবে দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। হাটে বেচাকেনা মোটামুটি ভালোই দেখছি। আমার ১০ থেকে ১৫টি গরু কেনার ইচ্ছা রয়েছে। কয়েকটি কিনেছি, আরও কেনার চেষ্টা করছি।
ঈশ্বরদী শহরের কলেজ রোড এলাকার গরু ব্যবসায়ী জীবন হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাজারদর কিছুটা বেশি। খাদ্যের দাম বেশি হলেও গরুর দাম সে তুলনায় বেশি হয়নি। তাই মানুষ তার সাধ্যের মধ্যেই কোরবানি দিতে পারবে।
এ হাটে দেশি-বিদেশি সকল জাতের গরু পাওয়া যায়। সারাদেশের মানুষ এ হাটে এসে ন্যায্যমূল্যে গরু বেচাকেনা করতে পারে। সেজন্য সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে মানুষজন।
ঈশ্বরদীর অরণকোলা এলাকার গরু ব্যবসায়ী বাচ্চু প্রমানিক বলেন, সারাদেশের লোক এখানে গরু বেচাকেনা করতে আসে। বেচাকেনা যাই হোক হাটে পর্যাপ্ত গরু উঠেছে। আমার কাছে এক লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদের আরো বেশ কিছুদিন দেরি রয়েছে। স্থানীয় যারা কোরবানির পশু কিনবেন তারা অনেকেই গরু কেনার চেয়ে গরুর বাজারদর দেখতে এসেছেন। আবার বিক্রেতারাও এ হাটের চেয়ে আগামী হাটে বেশি দাম পাবেন এ আশায় বিক্রি করছেন না। তাই এ হাটে বেচাকেনা কিছুটা কম হয়েছে।
হাটে গরু কিনতে আসা মিরকামারী গ্রামের আব্দুল হামিদ বলেন, এ বছর গরুর দাম কিছুটা বেশি। ভেবেছিলাম ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে পছন্দ অনুযায়ী একটি গরু কিনবো। কিন্তু হাটে এসে দেখলাম গরুর দাম গতবারের তুলনায় বেশি। তাই বাজেট আরো বাড়াতে হবে।
গরু কিনতে আসা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ গ্রামের আকরাম আলী জানান, হাট ঘুরে দেখালাম এ হাটে ৫ মণ ওজনের একটি দেশি গরু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়।
বিদেশি জাতের ৫ মণ ওজনের গরু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া এ হাটে ৬০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে। আমি এখনো গরু কিনতে পারিনি। দেখছি, দাম সাধ্যের মধ্যে হলেই গরু কিনে ফেলবো।
অরণকোলা পশুর হাটের ইজারাদার মিজানুর রহমান রুনু মন্ডল বলেন, হাটে পর্যাপ্ত গরুর আমদানি হয়েছে। লোকসমাগমও বেশি। কিন্তু বেচাকেনা তুলনামূলক কম। হাটে গরু কেনার চেয়ে দেখতে আসা মানুষের সংখ্যাই বেশি। আশা করছি আগামী হাট থেকে বেচাকেনা আরো বাড়বে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, অরণকোলা পশুর হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিতে মেডিকেল টিম কাজ করছে। সন্দেহজনক গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। 

 

#CBALO / আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর