সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

ভুয়া বিএড সনদে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি!

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১, ১১:২২ অপরাহ্ণ
হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভুয়া সনদে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মো. আব্দুর রহিম নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার অষ্টমনিষা হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারীদের মধ্যে।

জানা যায়, আব্দুর রহিম ১৯৮৪ সালে এসএসসি, ১৯৮৮ সালে এইচএসসি পাস করে ফরিদপুর উপজেলার বেড়হাউলিয়া মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিতে যোগ দেন এবং একই সালে এমপিওভুক্ত হন।  পরবর্তী তে ২০০১ সালে টাঙ্গাইল এমএম আলী কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন। তিনি ২০০৯ সালে বিএড ডিগ্রির ভুয়া সনদ দেখিয়ে ফরিদপুর উপজেলার আলহাজ্ব আবুল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তার এ ভুয়া বিএড ডিগ্রি সনদও ছিল সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল হওয়া ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের পর থেকে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সনদ বাতিল। ভুয়া সনদের বিষয়টি প্রমাণ হলে তিনি চাকরিচ্যুত হবেন এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে ভেবে তাই তিনি আলহাজ্ব আবুল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র দিয়ে আসেন এবং প্রায় এক বছর বিভিন্ন জায়গায় টিউশনি করেন। টিউশনি করার সুবাদে হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের সাথে তার সক্ষ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৭ নভেম্বরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবারো ভুয়া সনদ দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি নিয়ে এখন পর্যন্ত কর্মরত।

অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক ও তার সহোদর ভাই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পূর্বে আব্দুর রহিমের ভূয়া সনদের বিষয়ে সব কিছু জেনেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগের পর থেকে গত ১০ বছরে সরকারি তহবিল থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম কোন সদুত্তর দিনে পারেননি। পরে বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, রহিম সাহেব দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড ডিগ্রির একটি সনদ ও পূর্বের কর্মরত প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র দিয়ে যথারীতি নিয়মে আমাদের প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তবে তার বিএড ডিগ্রির সনদ ভূয়া প্রমাণ হলে প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া তার নিয়োগের সময় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন হয়নি।

হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল রশিদ সরকার বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকের সনদ ভূয়া প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, ভূয়া সনদের বিষয়টা তদন্তের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম মুসলিম উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে বিভাগীয় তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর