সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

মা মেয়েকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ গুরুদাসপুরে ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০, ৪:১৭ অপরাহ্ণ

মো. আখলাকুজ্জামান গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের দেবোত্তর গরিলা গ্রামে সামাজিক ফতোয়া দিয়ে একটি অসহায় পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে সোমবার থানায় মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৩ জুন) গ্রাম্য মাতব্বর ওসমান, রমজান, মকছেদ ও ইউপি সদস্য মোসাব্বের আলী যোগসাজশ করে রানীনগর মোল্লাপাড়া মসজিদের সামাজিক বিচার বসান। বিচারে শ্বাশুরী-জামাইকে উপস্থিত রেখে শরীয়ত পরিপন্থী অপরাধের জন্য তওবা পড়ান ইমাম নুরুজ্জামান। এ কারনে শ্বাশুড়ীর মেয়ে আর জামাইয়ের স্ত্রী থাকলো না বলে ফতোয়া দেন ওই মাওলানা। এরপর বাধ্য হয়েই স্বামীর ঘর ছেড়ে দুই সন্তানসহ মায়ের বাড়িতে অবস্থান নিতে হয় মেয়েকে। সেদিন থেকেই মা মেয়েকে একঘরে করে রাখা হয়। এরপর পরিবারটি সমাজের চোখে ধিকৃত ও অবজ্ঞার শিকার হয়। সোমবার (১৫জুন) এ ঘটনার খবর পেয়ে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ মা মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

অভিযোগ অস্বীকার করে ভুক্তভোগী ওই নারী (৫০) বলেন, ৮জুন সোমবার রাত ৮টার দিকে রানীনগর মোল্লাপাড়া হয়ে জামাইকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একই গ্রামের শুকচাঁদ, কামরুল, আতহার ও আলামিন নামে চার যুবক তাদের পথরোধ করে। অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে তাঁদের (জামাই-শ্বাশুরী) বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকার দাবী করে। টাকা না দেওয়ায় অপপ্রচার চালিয়ে মাঝরাতে ছেড়ে দেয় তারা। হঠাৎ ১৩জুন তাদের বিরুদ্ধে ওই মিথ্যা ফতোয়া দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীর মেয়ে ও জামাই বলেন, মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে তার স্ত্রীকে আলাদা করা হয়েছে। আইনের আশ্রয় নিতেও ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামী স্থানীয় ইউপি সদস্য মোসাব্বের আলী ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মামলার অন্যান্য আসামীরাও গা ঢাকা দিয়েছেন।

তবে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বলেন, বিষয়টি জানার পরে থানার ওসিকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।

ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ওই ফতোয়াবাজ গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী মেয়ের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন এবং আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর