রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

সাজানো সংসার এখন শুধুই পোড়া ছাই

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৪৮ অপরাহ্ণ

মোঃ কামাল হোসেন যশোর থেকে:

যশোরে এক সবজি ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়েছে। সোমবার (২৬ অক্টোবর) মধ্যে রাতে কে বা কারা যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের নিমতলী গ্রামের আখের আলী মোল্লার ছেলে আবু বাক্কারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে আবু বাক্কারের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারলেও তার সাজানো সংসার এখন পুড়ে ছাই হয়েছে। এমনতা অবস্থায় ফিরে পাবে কি মাথা গোজার ঠাই, পাবে কি ন্যায় বিচার? এমন দোলাচলে ভাসছে বাক্কার ও তার পরিবার। প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, বাক্কার পেশায় সবজি বিক্রেতা। দিন এনে দিন চলে বাক্কারের। অনেক কষ্টে টিন দিয়ে করেছিলো বাড়ি। টিনের বাড়ি হলেও ধার, দেনা করে তীলে তীলে সাজিয়েছিলো একটি ছোট্ট সোনার সংসার। দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ছিল সুখের সংসার। কিন্তু দুবৃর্ত্তের দেওয়া আগুনে পুড়েতো এখন সব শেষ হয়ে গেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বাক্কার। তবে বক্কারের অভিযোগের তীর তার প্রতিবেশি মশিয়ারের দিকে। দু’দিন আগে পূর্ব শত্রুতার জেরে সামন্য ঝগড়ায় বাড়িঘর ঝালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলো মশিয়ার ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম।

 

ক্ষতিগ্রস্ত বাক্কার জানান, ৯ মাস হলো তারা এই মাঠের ভেতরে বাড়ি করেছেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতেই বসবাস করছিলেন। মশিয়ারের সাথেও ছিলো ভালো সম্পর্ক। তাদের বাড়ি থেকেই সাইড লাইন নিয়ে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ চলছিল। কিন্তু বিল ভাগাভাগি নিয়ে সম্পর্কের অবনতির সুত্রপাত। সেই থেকেই বক্কারের পরিবারের ওপর নানাভাবে অত্যাচার করতে থাকে মশিয়ার ও তার স্ত্রী। রাতে ঘরের চালে ঢিল ছোড়া, বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি হওয়ার মতও ঘটনা ঘটতে থাকে। সর্বশেষ তিন মাস আগে চুরি হয় রান্না ঘরের শীল-পাটা। দুদিন আগেই সেটি পাওয়া যায় মশিয়ারের বাড়ি থেকে। আর এটিই হলো তার কাল। বলেছিল কিভাবে থাকতে পারে এই বাড়িতে। কিন্তু এভাবে দেখে নেবে সেটা ভাবতে পারেনি কেউই। দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে তার ৫ লক্ষাধিক টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বাক্কারের স্ত্রী রাবেয়া জানান, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। পরণের কাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই। হাড়ি-পাতিল, সংসারের আসবাবপত্রসহ যাবতীয় জিনিস পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা এখন কি খাবো কোথায় থাকবো। আমরা গরীব মানুষ বলে কি ন্যায় বিচার পাবো না। আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম সেই সুযোগে আমার সব পুড়িয়ে দিল? আমাদের এমন সর্বনাশ কিভাবে করলো এসব বলতে বলতে মুর্ছা যাচ্ছে বারবার। এদিকে রাত থেকেই এলাকার মানুষ ছুটছে পোড়া ঘর দেখতে।

 

তাদের এমন অবস্থা দেখে হা হুতাশ করছে সকলে। সকলের দাবি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত পূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় এনে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের। প্রতিবেশি হাবিবুর রহমান জানান, রাতে চারিদিকে চেচামেচি শুনে ছুটে এসে দেখেন দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চেষ্টার পর আগুন নিভাতে সক্ষম হন তারা। পরে বিদ্যুত অফিসের লোক এসে দেখে বলেন এটি সর্ট সার্কিট থেকে হয়নি। কেউ হয়ত আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে অভিযুক্ত মশিয়ার রহমান বলেন, এসব মিথ্যা কথা। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। হতে পারে তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক নেই,তাই বলে এমন নিঃশ^ করা কর্মকান্ড আমরা করেনি। এ বিষয়ে কচুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর