বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :

চাটমোহরে কৃষক লীগ নেতা থেকে তাঁতী দলের সভাপতি

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

উপজেলার কৃষক লীগ কমিটির সদস্য ছিলেন আব্দুস সালাম। পট পরিবর্তনের পর কৃষক লীগ থেকে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের বিলচলন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। অভিযুক্ত সালামের বাড়ি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের উত্তরসেনগ্রামে। তিনি বিলচলন ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

কৃষক লীগ ও তাঁতী দলের অনুমোদিত কমিটির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চাটমোহর উপজেলা কৃষক লীগের কমিটি অনুমোদন করেন। সেই কমিটির ৬৯ নাম্বার সদস্য ছিলেন আব্দুস সালাম।

এদিকে, চলতি বছরের গত ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল বিলচলন ইউনিয়ন শাখার কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাঁতী দল চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম স্বাক্ষরে অনুমোদনকৃত কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন সেই কৃষক লীগ সদস্য আব্দুস সালাম। এছাড়াও সালামের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

সেখানে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্টার শেয়ার করেছিলেন তিনি। যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও জয় এর ছবি এবং পাবনা-৩ আসনের সাবেক এমপি (আ.লীগ) মকবুল হোসেনের ছবি রয়েছে। পাশাপাশি বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন (আ.লীগ) এর সাথে রয়েছে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক। সেই সুবাদে চেয়ারম্যানের সাথে মোটরসাইকেলে সালাম আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুস সালাম বলেন, ‘কৃষকলীগের কমিটির কোনো পদে ছিলাম না। ওই কমিটির সদস্য কবে কিভাবে হয়েছি নিজেও জানি না। কেউ আমার আইডি কার্ড ব্যবহার করে এই কাজ করতে পারে। আর ইউপি সদস্য হিসেবে কখনও কখনও চেয়ারম্যানকে নিয়ে চলাফেরা করতে হয়েছে। সেটা দোষের কিছু নয়। এছাড়া আমার এক নাতী আমার ফোন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিল। সেটা দেখার সাথে সাথে ডিলিট করে দিয়েছিলাম। আমি এবং আমার গোষ্ঠি সারাজীবন বিএনপি করে আসছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন তো অনেক আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বিএনপির লোকজন ঘুরে বেড়ায়। সেগুলো তো কেউ দেখে না। বিশেষ করে যে আকতার চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমার ঘোরার ছবির কথা বলছেন সেই আকতার চেয়ারম্যানকে নিয়ে এখন বিএনপিরই লোকজন ঘুরে বেড়ায়। তাহলে তাদের কি হবে?’

জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মজনু খাঁ বলেন, আব্দুস সালাম ঐ সময়ে সম্ভবত জেলা কৃষকলীগের কমিটিতে ছিলেন। আমাদের সাথেও দল করেছে। মাঝেমধ্যে আমাদের কাছে আসা যাওয়া করেছে। এখন তিনি যদি অন্য দল করেন সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম বলেন, ‘আপনি যে অভিযোগের কথা বললেন সেটি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি আমি যাচাই বাছাই করবো। অভিযুক্ত আব্দুস সালাম কৃষকদল করতেন জেনে তাকে কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে। তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সে কারণে সালাম যে কৃষকদল করতেন তার প্রমাণ চাইবো। তারপর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর কাউকে অনুপ্রবেশ করিয়ে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হতে দেবো না।’

চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) বলেন, ‘ওই ইউনিয়নের কমিটির দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্ব ছিল সেক্রেটারীর। তাকে বলেছিলাম, অন্যকোনো দলের কেউ আছে কি না। সেক্রেটারী আমাকে নিশ্চিত করেছিলেন কোনো সমস্যা নাই। তারপর কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। এখন শুনছি আব্দুস সালাম নাকি অন্য দল করতো। আমি নিজে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে তাকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর